
দেশচিন্তা ডেস্ক: চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ায় যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশকে দুষছেন সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে বাকলিয়ার তক্তারপুলে নিহত সাজ্জাদের বাসায় যান মেয়র। সেখানে শাহাদাত হোসেন দাবি করেন, তিনি বাকলিয়া এলাকার ‘উত্তপ্ত পরিস্থিতি’ নিয়ে সোমবারই ফোন করেছিলেন চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনারকে।
অ্যাকসেস রোডে আগেও মার্ডারের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি গতকাল কিছু ছেলে আমার কাছে এসেছিল। তারা বলছে যে, এখানে গন্ডগোল হতে পারে। এখানে বেশ উত্তেজিত পরিবেশ। আমি পুলিশ কমিশনার সাহেবকে বলেছি ফোন করে। এবং বলেছি এই ছেলেগুলোকে গ্রেপ্তার করতে। এমনকি ঘটনার মনে হয় ঘণ্টাখানেক আগে।
সোমবার গভীর রাতে বাকলিয়া থানার সৈয়দ শাহ রোডের মদিনা আবাসিকের সামনে ব্যাপক গোলাগুলির পর সাজ্জাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ২২ বছর বয়সী সাজ্জাদ তক্তারপুল এলাকার বাসিন্দা আলমের ছেলে। তাদের বাড়ি কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলায়। তিনি সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেনের অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত।
মেয়র বলেন, আমি সম্পূর্ণ বাকলিয়া থানাকে দোষ দিব। সুনির্দিষ্ট এই ছেলেগুলোকে তারা যদি গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসতে পারত এবং তাদের মামলায় দিয়ে যদি জেলে রাখতে পারত, তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটত না।
শাহাদাত হোসেন বলেন, বাকলিয়া থানার যারা দায়িত্বে আছেন, তাদের গতিবিধি এবং ওসিসহ যারা কর্মকর্তা আছেন; তাদের ব্যাপারে আমার প্রশ্ন আছে। বাকলিয়া থানার ওসিকে আমি কিন্তু বলেছি, বিশেষ করে বোরহান যে ছেলেটা এবং সোহেলসহ ওই ছেলেগুলোকে গ্রেপ্তার করার জন্য। এক সপ্তাহ বা ১০ দিন আগে বলেছি।
আমার মনে হচ্ছে বাকলিয়া থানার দায়িত্বপ্রাপ্তরা আওয়ামী লীগের কোনো না কোনো ঊর্ধ্বতনের পরামর্শে এই থানা চলছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার করার জন্য আমি পুলিশ কমিশনার সাহেবকেও বলেছি। পুলিশ কমিশনার সাহেব ওসিকে বলেছে; কিন্তু ওসি কেন জানি তাদেরকে গ্রেপ্তার করছে না।
বিএনপি নেতা শাহাদাত বলেন, আমি বলেছি, যদি আমার দলেরও কেউ তাদেরকে শেল্টার দিয়ে থাকে, দরকার হলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নাও। তাকেও গ্রেপ্তার কর। এটা কিন্তু ওসিকে আমি বলেছি। এবং এই ছেলেগুলোর ব্যপারে আমি স্পষ্ট বলেছি তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে। একদম আমি নাম ধরে বলেছি। আজকে আমি মিডিয়ার সামনে বলছি। ১০-১২দিন আগে একটি বাসে আমাদেরই যুবদলের ছেলেদের তারা অ্যাটাক করেছিল।
মেয়র শাহাদাত বলেন, এই যে সুনির্দিষ্ট যে ছেলেগুলোর কথা এসেছে, আমি বলছি অনতিবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করা উচিত। এবং আমাদেরও যদি কেউ থেকে থাকে তাকেও আইনের আওতায় আনা উচিত।
এখানে সন্ত্রাসীদের কোনো দল নাই। আমি বারবার বলছি, এই শহরটাকে নিরাপদ শহর হিসেবে দেখতে চাই। আমি চাই না, এখানে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের অভয়ারণ্যে পরিণত হোক। যুবলীগ-ছাত্রলীগের যেসব ক্রিমিনাল এখানে আছে; এমনকি দক্ষিণ জেলার কিছু ছেলেও এখানে আছে।
স্থানীয়রা জানান, ব্যানার খুলে ফেলা নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল নেতা এমদাদুল হক বাদশা ও বোরহান উদ্দিনের অনুসারীদের মধ্যে রাতে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
যুবদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সৈয়দ শাহ রোডে সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেনের ছবিসহ একটি ব্যানার টানান বোরহান। রাতে বাদশার অনুসারীরা সেটি নামিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন। এসময় বোরহান ও তার পক্ষের লোকজন বাধা দিলে সংঘর্ষের শুরু হয়। এতে সাজ্জাদসহ ৮ থেকে ১০ জন গুলিবিদ্ধ হয়।
এমদাদুল হক বাদশা চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। দখল-চাঁদাবাজির অভিযোগে মাস কয়েক আগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
বাকলিয়া থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন মঙ্গলবার সকালে বলেন, “ব্যানার টাঙানো নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সূত্রপাতের কথা শোনা যাচ্ছে। সংঘর্ষে এক জন মারা গেছে বলে আমরা খবর পেয়েছি।”










