
দেশচিন্তা ডেস্ক: প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের ৫১ ও ৫৪তম ব্যাচের উদ্যোগে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সোমবার, সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারী লেইনস্থ ভবনে আয়োজিত হলো ‘চেজিং দ্য লস্ট বিলিয়নস: লন্ডার্ড মানি এন্ড ইটস টল অন আওয়ার ইকোনোমি’ শীর্ষক এক সিম্পোজিয়াম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক এস. এম. নছরুল কদির। বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব অনুপ কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে আয়োজনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইন অনুষদের সহকারী ডিন জনাব তানজিনা আলম চৌধুরী। গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী অধ্যাপক তাহমিনা সানজিদা সাহিদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক এস. এম. নছরুল কদির মানি লন্ডারিং কীভাবে হয়, সেই বিষয়ে হাতে-কলমে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেন। তিনি মানি লন্ডারিং রোধে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং শুধু অর্থনীতির ক্ষতি করে না, এটি সমাজের নৈতিক ভিত্তিকেও দুর্বল করে তোলে। দেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থ পাচার হলে আমাদের উৎপাদনশীল খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যায় এবং রাষ্ট্রের উন্নয়ন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং ভবিষ্যতে আইনজীবী হিসেবে তাদের দায়িত্ব হবে—স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের মাধ্যমে জাতীয় সম্পদ রক্ষায় অবদান রাখা। আমি বিশ্বাস করি, আজকের এই সিম্পোজিয়ামের আলোচনা ভবিষ্যতের আইন পেশাজীবীদের মধ্যে একটি শক্তিশালী নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
বিশেষ অতিথি জনাব তানজিনা আলম চৌধুরী বলেন, মানি লন্ডারিং একটি জটিল আর্থিক অপরাধ, যা শুধু রাষ্ট্রের অর্থনীতিকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না, বরং সুশাসন ও সামাজিক ন্যায়বিচারের পথকেও বাধাগ্রস্ত করে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দরকার দৃঢ় নীতি, কার্যকর আইন এবং পেশাদার দক্ষতা। ভবিষ্যতের আইনজীবী হিসেবে শিক্ষার্থীদের উচিত পাঠ্যজ্ঞানকে ব্যবহারিক প্রেক্ষাপটে প্রয়োগ করা এবং সমাজে নৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্ব পালন করা। এ ধরনের সিম্পোজিয়াম তরুণদের গবেষণার মনোভাব জাগ্রত করে এবং তাদেরকে দেশের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যুক্ত হতে উৎসাহিত করে।
গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক সহকারী অধ্যাপক তাহমিনা সানজিদা সাহিদ বলেন, লন্ডারিংকৃত অর্থের কারণে আমাদের অর্থনৈতিক কাঠামো ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে। আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য এই বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন অপরিহার্য, কারণ সুসংহত আইনগত কাঠামো এবং সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমেই অর্থ পাচার রোধ করা সম্ভব। শিক্ষার্থীরা যদি তাদের পাঠ্যজ্ঞানকে বাস্তব জীবনের সমস্যার সাথে যুক্ত করতে পারে, তবে তারা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে।
সভাপতির বক্তব্যে বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব অনুপ কুমার বিশ্বাস বলেন, আইন শুধু পাঠ্যবিষয় নয়, এটি সমাজ গঠনের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। অর্থ পাচারের মতো অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে আমাদের আইনি জ্ঞান, নৈতিক মূল্যবোধ এবং বাস্তব জীবনের প্রেক্ষাপট—সবকিছু নিয়ে প্রস্তুত হতে হবে। আজকের সিম্পোজিয়াম শিক্ষার্থীদের সেই প্রস্তুতিতে দিকনির্দেশনা দেবে বলে আমি আশা করি।
সিম্পোজিয়ামে ৫১ ও ৫৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ফিল্ড ওয়ার্কের আলোকে মানি লন্ডারিং-এর উপর তাদের তৈরি করা রিসার্চ পেপার উপস্থাপন করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন আইন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।