আজ : শনিবার ║ ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : শনিবার ║ ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ২১শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

পানগাঁও টার্মিনাল একক ব্যবস্থাপনায় নিচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর

দেশচিন্তা ডেস্ক: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এককভাবে পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল (আইসিটি) পরিচালনার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সঙ্গে বন্দরের একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। একই অনুষ্ঠানে বন্দরের পশ্চাদ সুবিধাসহ একটি হেভি লিফট কার্গো জেটি নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সঙ্গে আরেকটি সমঝোতা স্মারকও সই হয়।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় বিআইডব্লিউটিএর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, নৌবাহিনীর পক্ষে রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) আনোয়ার হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে পানগাঁও আইসিটি ও তৎসংলগ্ন প্রায় ৪৮ দশমিক ২৪ একর জায়গা প্রচলিত নিয়মে লিজ নিয়ে এককভাবে পরিচালনা করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রথম পর্যায়ে ২০২৫ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০৩৫ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ ১০ বছরের মেয়াদে বার্ষিক নবায়ন সাপেক্ষে লাইসেন্স দেবে। তবে চুক্তির কার্যকারিতা থাকবে ৩০ বছর।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিএ ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত এবং মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এ চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বর্তমানে প্রায় ৯৫ শতাংশ পণ্য সড়কপথে পরিবহন হয়ে থাকে। এতে একদিকে পরিবহন খাতে ব্যয় বাড়ছে, অন্যদিকে সড়ক মহাসড়কে চাপও বাড়ছে। বন্দর সচিব বলেন, “নিরাপদ ও সাশ্রয়ী পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নদীপথ ব্যবহারের বিকল্প নেই। পানগাঁও আইসিটি জনপ্রিয় হলে এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা আরও উৎসাহিত হবেন।”

এ ছাড়া বন্দরের ব্যবস্থাপনায় পানগাঁও আইসিটিতে একটি ফ্রি কটন জোন গড়ে তোলা হবে। এটি দেশের শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

একই অনুষ্ঠানে বন্দরের ‘পশ্চাদ সুবিধাসহ হেভি লিফট কার্গো জেটি নির্মাণ প্রকল্প’ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। প্রকল্পটি ‘অর্পিত ক্রয়কার্য হিসেবে’ নৌবাহিনী বাস্তবায়ন করবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া-২ এলাকায় ২৪০ মিটার দীর্ঘ এ জেটি নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে এনসিটি বার্থ নং-৫ সাময়িকভাবে ভারী কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের জন্য ব্যবহার হলেও সেটি মূলত কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য নির্মিত ছিল। নতুন হেভি লিফট জেটি প্রতি বর্গমিটারে ৫ টন পর্যন্ত ভার বহন করতে সক্ষম হবে, যেখানে বিদ্যমান এনসিটি বার্থের সক্ষমতা মাত্র ৩ টন।

বন্দর সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দুটি সমঝোতা চুক্তি চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে। একদিকে পানগাঁও টার্মিনাল সক্রিয় হলে নদীপথ পরিবহন বাড়বে, অন্যদিকে হেভি লিফট জেটি নির্মিত হলে শিল্পকারখানার জন্য ভারী আমদানি পণ্য হ্যান্ডলিং সহজ হবে। এতে দেশের শিল্পায়ন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা আরও জোরদার হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ