আদালত প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম মহানগরীর হিন্দুদের সবচেয়ে বড় প্রর্থনালয় জেএমসেন হলের পূজামণ্ডপে ‘ইসলামী সঙ্গীত’ পরিবেশনের ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই শিল্পীর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) চট্টগ্রাম ৬ষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাজী শরিফুল ইসলাম এ আদেশ দেন। ওই দুই শিল্পী হলেন- চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সদস্য শহীদুল করিম ও নুরুল ইসলাম। দুজনই মাদ্রাসার শিক্ষক।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শামসুল আলম বলেন, দুই আসামি পূজা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণে গিয়েছিলেন। মঞ্চে ওঠার আগে তাদের নাম ঘোষণা করা হয়। আর গান পরিবেশনের পর তাঁদের ধন্যবাদও দেওয়া হয়। গতকাল বিজ্ঞ বিচারক তাদের রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেছিলেন এবং আজ জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
এর আগে, সোমবার (১৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রিমান্ড আবেদন শুনানি শেষে নামঞ্জুর করলে বাদী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তুমুল হট্টগোল বাঁধে। বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সুজন দাস।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আবেদনের শুনানি শেষে আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে জামিনের আদেশ দেন। ওই সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীদের সাথে বাদীপক্ষের আইনজীবীদের তুমুল বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে বিচারক বিরক্ত হয়ে এজলাস ত্যাগ করেন।
চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সদস্য মুহাম্মদ এনামুল হক জানান, পূজা কমিটির আমন্ত্রণে দেশত্ববোধক ও সম্প্রীতির গান গাওয়াতে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আমাদের দুই ভাইকে গ্রেফতার করেছিলো। আলহামদুলিল্লাহ আজকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ফেসবুকে একটি ভিডিওর কিছু অংশ ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায় একটি পূজামণ্ডপে ছয়জন যুবক ‘ইসলাম ধর্মের মাহাত্ম্য’ প্রকাশ করে– এমন একটি গান গাইছেন। এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হওয়ার পরপরই তা ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি হয়। পরে শুক্রবার নগরের কোতোয়ালী থানায় মহানগর পূজা কমিটির অর্থ সম্পাদক সুকান্ত বিকাশ মহাজন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
মামলায় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক (বহিষ্কার) সজল দত্ত, চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সদস্য শহীদুল করিম, নুরুল ইসলাম, আবদুল্লাহ ইকবাল, মো. রনি, গোলাম মোস্তফা, মো. মামুনসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। পরে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ওই দুই শিল্পীকে।