দেশচিন্তা ডেস্ক : চট্টগ্রাম মহানগরের নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহারে ‘যৌন হয়রানি’র অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি বিভাগের শিক্ষক ড. জিনবোধি ভিক্ষুর বিরুদ্ধে। ধর্মীয় কাজে অংশ নিতে গিয়ে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন- এমন অভিযোগ তুলে কোতোয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন ‘বৌদ্ধ সমিতি মহিলা, বাংলাদেশ’ এর একজন জ্যেষ্ঠ নেত্রী।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে শুক্রবার (৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে একজন নারীরকে মোবাইল দে বলতে শোনা যায় এবং তা নেওয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায় একুশে পদক পাওয়া ড. জিনবোধি ভিক্ষুকে।
দুই মিনিট তিন সেকেন্ডের ভিডিওটিতে আরও দেখা যায়, ভিক্ষু চলে যাচ্ছিল তখন মেয়েটি যা তা বকতে দেখা যায় এর জবাবে ‘বেশ্যার ক্যঁথা ফোর’ বলতে শোনা যায়।
তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. জিনবোধি ভিক্ষু বলেন, ‘অবৈধ, অনির্বাচিত এবং বৌদ্ধমন্দির জালিয়াতকারী ওরা। হাইকোর্ট থেকে জজকোর্ট আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। তাদেরকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। আমরা গুরুপূজার আয়োজন করি। এ বৌদ্ধ বিহারের আমি সভাপতি। ওরা কোনো ভক্ত বা গুরুজনদের ঢুকতে দিচ্ছে না। ওই সময়ে ওই নারী আমার মোবাইল কেড়ে নিয়ে নেয়। পুলিশ নিয়ে যখন গিয়েছি তখন মোবাইল ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছে।’
যৌন হয়রানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি ৬৪ বছর বয়সী একজন শিক্ষক। উনি আমার বোন, উনার ছেলেমেয়ে মানুষ করেছি আমি। আমি যৌন হয়রানিতে জড়িত না।’
এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং জিনবোধি ভিক্ষুর শাস্তির দাবিতে শুক্রবার নগরে সম্মিলিত নারী সমাজ মিছিল করেছে। এ সময় তারা সরকার কর্তৃক জিনবোধি ভিক্ষুকে দেওয়া একুশে পদক প্রত্যাহার করে নেওয়ার আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ বাংলাদেশি বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীগুরু ড. জ্ঞানশ্রী মহাথের ও চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের আবাসিক প্রধান শিক্ষাবিদ এম বোধিমিত্র মহাথের বলেন, মহামানব গৌতম বুদ্ধের মতে গৃহত্যাগের পর বৌদ্ধ সন্যাসীরা যেখানে কোনোরকম গৃহী মানুষের সংস্পর্শে যেতে পারে না, সেখানে একজন নারীর সম্ভ্রম ও শ্লীলতাহানি কোনোভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। এটি ঘৃণ্য কাজ, এর তীব্র নিন্দা জানাই।
জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম ওবায়দুল হক বলেন, ‘সেখানে একটি অনুষ্ঠান নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। যাকে নিয়ে দ্বন্দ্ব তিনিই অনুষ্ঠানে আসেননি। দুপক্ষই লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। সেগুলোকে সাধারণ ডায়েরি হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।’