
আদালত প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম-১৬ আসনের মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে বক্তব্য চাওয়ায় সাংবাদিকদের মারধরের মামলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান জামিন নিয়েছেন। বুধবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি।আদালত শুনানি শেষে মামলার পরবর্তী ধার্য্য দিন পর্যন্ত জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর পক্ষে আদালতে দাঁড়ান চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস এম বজলুর রহমান। তিনি মামলায় আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা উল্লেখ করে জামিনযোগ্য ধারা দাবি করে মোস্তাফিজুর রহমানের জামিন প্রার্থনা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁশুলি অতিরিক্ত জেলা পিপি আজহারুল হক চৌধুরী সাংবাদিককে মারধরের আসামি জামিন পেলে সহিংসতাকারীরা উৎসাহিত হবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে উল্লেখ করে জামিনের বিরোধিতা করেন।
গত ২৬ ডিসেম্বর বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হারুন মোল্লা বাদী হয়ে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। প্রার্থীর নির্বাচনি আচরণবিধি, ২০০৮ এর ৮ (খ) ধারায় দায়ের করা এ মামলায় মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এবং আরও ২০-৩০ জনেক অজ্ঞাতনামা হিসেবে আসামি করা হয়। আদালত ৩ জানুয়ারির মধ্যে মোস্তাফিজুরকে সশরীরে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন।আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য গ্রহণ করে মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখ পর্যন্ত আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁশুলি।
সাংবাদিককে ফোন করে গালিগালাজ, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে ‘অশালীন’ মন্তব্য, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য, সাংসদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা, বাঁশখালীতে নিজ দলের বিরোধী নেতাকর্মীদের দমনপীড়ন, প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মিছিলসহ নানা কারণে তিনি বারবার গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন তিনবারের এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। ৩০ নভেম্বর চট্টগ্রামের রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে আচরণবিধি ভঙ্গ করেন মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও তাঁর লোকজন।
মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বের হলে সাংবাদিকরা আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তখন রেগেবেগে প্রশ্ন গালি দিয়ে ওই সাংবাদিককে হাত দিয়ে ধাক্কা দেন এবং হুমকি দিতে থাকেন। তার সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা এসময় অন্য সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন।
সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের কাছে গিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানান। পরে এ বিষয়ে সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর লিখিত ব্যাখ্যা চান এ আসনের নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আবু সালেম মোহাম্মদ নোমান।
সে অনুযায়ী প্রতিনিধির মাধ্যমে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির কাছে লিখিত ব্যাখ্যা দেন মোস্তাফিজুর। অভিযোগ ও সংসদ সদস্যের বক্তব্য যাচাই বাছাই করে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি যে প্রতিবেদন দেন, সেখানে আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হয়।