
আদালত প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজতের তাণ্ডবে দায়ের করা তিন মামলায় মুফতি হারুন ইজহারের বিরুদ্ধে প্রত্যেক মামলায় তিন দিন করে মোট ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। তিনি হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক ও ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের চেয়ারম্যান মুফতি ইজাহারুল ইসলামের ছেলে।
আজ সোমবার (৩ মে) দুপুরে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিন ভার্চ্যুয়াল শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
একই সঙ্গে সিআইডির তদন্তানাধীন হাটহাজারী থানার আরও দুই মামলায় হারুন ইজাহারকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর অনুমতি দিয়েছে আদালত।
গত বুধবার রাতে নগরের লালখান বাজার জামেয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা থেকে হারুন ইজাহারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে র্যাব তাকে হাটহাজারীর সহিংসতার ঘটনার ‘মদদদাতা’ দাবি করে হাটহাজারী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরের দিন বৃহস্পতিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক হুমায়ুন কবির বলেন, হাটহাজারী থানার তিন মামলায় সাত দিন করে মোট ২১ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। আদালত শুনানি শেষে তিন দিন করে মোট ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। একই সঙ্গে সিআইডির তদন্তনাধীন আরও দুই মামলায় হারুন ইজহারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আদালত সূত্র জানায়, হেফাজতে ইসলামের আগের কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দীন রুহীর গত বছরের সেপ্টেম্বরে করা মারধরের মামলা, থানায় হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে পুলিশের করা দুই মামলাসহ তিন মামলায় হারুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হাটহাজারী থানার পুলিশ গত বৃহস্পতিবার সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত সোমবার শুনানির দিন ধার্য রাখেন।
হারুন ইজাহার বিস্ফোরক মামলায়ও ২০১৩ সালে গ্রেপ্তার হন। তার বিরুদ্ধে আগের ১৭টির পাশাপাশি এবার নতুন করে আরও ৫টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এনিয়ে তার মামলা সংখ্যা মোট ২২টি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরবিরোধী কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত ২৬ মার্চ জুমার নামাজের পর ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার জের ধরে হাটহাজারী ও পটিয়ায় সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ৪ হাজার ৩০০ জনকে আসামি করে পটিয়া ও হাটহাজারী থানায় হামলা, ভূমি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে জড়িত থাকার অভিযোগে করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনে পৃথক সাতটি মামলা হয়। পরে ২২ এপ্রিল হেফাজতের নেতা-কর্মীদের আসামি করে পৃথক তিনটি মামলা করে হাটহাজারী থানার পুলিশ। এর মধ্যে দুই মামলায় বিলুপ্ত কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরীকে আসামি করা হয়। তিন মামলায় আসামি করা হয় তিন হাজার জনকে। এর মধ্যে ১৪৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।