রোহিঙ্গা নাগরিক জামালকে ভান্ডারিয়া পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের স্থায়ী নাগরিক হিসেবে শনাক্তকারী নারী কাউন্সিলর বেবী আক্তারকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। ২৪ ফেব্রুয়ারি সোমবার আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানালে বিচারক মো. মহিউদ্দিন তার জামিন আবেদন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আকন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বাদী পিরোজপুর গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন জসিম জানান, রোহিঙ্গা সদস্য জামাল তার অপর দুই ভাই আবু তৈয়ব (১৩), আবু হায়াত (১০) এবং তিন বোন রুখাইয়া (২২), জামালিডা (১৬) এবং সোমাকে (৮) নিয়ে ২০১৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসেন। এরপর তারা কক্সবাজার জেলার বালুখালী ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। রোহিঙ্গা জামালের বাবার নাম-আমির হোসেন ও মায়ের নাম বেলুয়া বেগম। তারা রাখাইনে ডোমিনা জেলার রাম্যখালি থানার বাসিন্দা। রোহিঙ্গা জামালের রিফিউজি নম্বর-১৩২২০১৮০১২০১৪৫৮৫২।
একমাস আগে রোহিঙ্গা জামাল আশ্রয় ক্যাম্প থেকে পালিয়ে ভান্ডারিয়ায় আসেন। এরপর রোহিঙ্গা নাগরিক জামালকে স্থানীয় শাহীনুর বেগম আশ্রয় দেন। শাহীনুর বেগম জামালকে সন্তান পরিচয় দিয়ে জন্ম সনদ সংগ্রহ করে দেন। আর জন্ম সনদ সংগ্রহে নারী কাউন্সিলর বেবী আক্তার জামালকে ভান্ডারিয়া পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিক বলে শনাক্ত করেন। পরে জাতীয় পরিচয়পত্র (নম্বর-১৯৯৭৭৯১১৪১১০০০৫১০) সংগ্রহেও জামালকে সহায়তা করেন শাহীনুর বেগম।
জামাল নিজেকে বাংলাদেশি প্রমাণে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বয়সের সনদ এবং রাজাপুর উপজেলার কানুদাসকাঠী-নলবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০৯ সালের অষ্টম শ্রেণি পাসের সার্টিফিকেটও সংগ্রহ করেন।
পরে মো. মিজান সিকদার ও শাহীনুর বেগমকে বাবা-মা পরিচয় দিয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পিরোজপুরের আঞ্চলিক কার্যালয়ে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন জামাল। তবে আঙুলের ছাপ দিতে গেলে জানা যায় সে মিয়ানমারের নাগরিক।
পিরোজপুর পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক মো. আবুল হোসেন জানান, রোহিঙ্গা জামালের আঙুলের ছাপ নেওয়ার সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের তথ্য বেরিয়ে আসে।
গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন জসিম আরও জানান, ১৮ ফেব্রুয়ারি ভান্ডারিয়া থেকে জামালের আশ্রয়দানকারী মা শাহীনুর বেগমকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এ ধারাবাহিকতায় আজ নারী কাউন্সিলরকেও আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন।