
দেশচিন্তা ডেস্ক: ইসরাইলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজায় এবার ভয়াবহ তাণ্ডব চালিয়েছে স্টর্ম বায়রন। ধসে পড়েছে ঘর, দেয়াল ও তাঁবু। পর্যাপ্ত পোশাক, জ্বালানির অভাবে বিপর্যস্ত হাজারো পরিবার। ঝড়ে মারা গেছেন অন্তত ১৪ জন।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইলের হামলায় উপত্যকার বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা আগে থেকেই সংকটে থাকলেও এই দুর্যোগ নতুন করে বিপর্যয় ডেকে এনেছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বরাষ্ট্র ও জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, স্টর্ম বায়রন আঘাত হানার পর গাজা উপত্যকাজুড়ে প্রবল ঝড়ে ধসে পড়েছে ঘর, দেয়াল, আশ্রয়ের একমাত্র ভরসা তাঁবুগুলোও। পর্যাপ্ত পোশাক, জ্বালানি বা টিকে থাকার মতো কোনো সুরক্ষা রসঞ্জাম ছাড়া বিপর্যস্ত হাজারো পরিবার।
গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ভোরে উত্তর গাজার বির আন-নাজা এলাকায় বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয় দেয়া একটি বাড়ি ঝড়ে ধসে পড়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। একইদিন ভোরে গাজা সিটির রেমাল এলাকায় একটি দেয়াল ভেঙে তাবুর ওপর পড়ে আরও দুইজন নিহত হন। এর আগের দিন শাতি শরণার্থী শিবিরে একটি কাঠামো ধসে একজন মারা যান। আল-মাওয়াসিতে প্রচণ্ড ঠান্ডায় এক শিশুর মৃত্যু হয়।
দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক ইব্রাহিম আল-খালিলি জানান, ঝড়টি আশ্রয়কেন্দ্রগুলোকে মৃত্যুফাঁদে পরিণত করেছে। তিনি বলেন, আজও বন্যা, ভারী বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ঝড়ের কারণে ৭৬১টি আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা প্রায় ৮ লাখ ৫০ হাজার মানুষ ঝুঁকিতে রয়েছে।
জাতিসংঘের হিসাবে প্রায় ৮ লাখ মানুষ এখন প্রবল ঝুঁকিতে। দুর্যোগ মোকাবিলার মতো কোনো অবকাঠামো নেই উপত্যকাটিতে। ইসরাইলি অবরোধ, যুদ্ধের ক্ষতি আর ভয়াবহ আবহাওয়া মিলে মানবিক সংকট এখন চরমে।
এদিকে, লন্ডনে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রান্সেসকা আলবানিজ বলেন, গাজা পুনর্গঠনের খরচ শুধু ইসরাইলের নয়, যে দেশগুলো তেল আবিবকে অস্ত্র দিয়েছে তাদেরও বহন করতে হবে। এই তালিকার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্য।
অন্যদিকে, মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে রয়টার্স জানায়, আগামী মাসেই গাজায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী মোতায়েন করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করছে যুক্তরাষ্ট্র।
জাতিসংঘ অনুমোদিত এই বাহিনীর নেতৃত্বে একজন মার্কিন দুই–তারকা জেনারেল থাকার প্রস্তাব রয়েছে। এই বাহিনী হামাসকে সরাসরি আক্রমণ করবে না, এটা হবে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার দ্বিতীয় ধাপ। হোয়াইট হাউস বলছে, টেকসই শান্তি নিশ্চিতের জন্য নীরব পরিকল্পনা এরইমধ্যে শুরু হয়েছে।


















