আজ : বুধবার ║ ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : বুধবার ║ ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

প্লাস্টিক সার্জারি নিয়ে যে কঠোর সমালোচনা করলেন কেট উইন্সলেট

দেশচিন্তা ডেস্ক: হলিউড তারকা অভিনেত্রীদের প্লাস্টিক সার্জারির ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতার কঠোর সমালোচনা করেছেন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী কেট উইন্সলেট। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তরুণ অভিনয়শিল্পীরা ইনস্টাগ্রামে আরও বেশি লাইক পাওয়ার জন্য নিখুঁত হওয়ার পেছনে অন্ধভাবে দৌড়াচ্ছেন বলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ কথা বলেন টাইটানিকখ্যাত হলিউড অভিনেত্রী।

প্লাস্টিক সার্জারির ওপর অতি নির্ভরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কেট উইন্সলেট বলেন, কারও আত্মসম্মান যদি পুরোপুরি নিজের চেহারার ওপর নির্ভর করে, সেটি ভয়ের ব্যাপার। কারণ কখনো কখনো মনে হয় পরিস্থিতি বদলাচ্ছে—লালগালিচায় বিভিন্ন আকৃতির, নিজেদের মতো করে সাজা অভিনেত্রীদের দেখি। তিনি বলেন, আবার দেখি, অনেকেই ওজন কমানোর ওষুধ নিচ্ছেন। কেউ নিজের মতো থাকতে চাইছেন, আবার কেউ যেভাবেই হোক নিজেকে বদলে ফেলতে চাইছেন।

এ অস্কারজয়ী অভিনেত্রী বলেন, তারা কি জানেন— নিজেদের শরীরে ঠিক কী ঢুকিয়ে দিচ্ছেন? নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি এই অবহেলা ভয় ধরিয়ে দেয়। এখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বিষয়টি আমাকে বেশি নাড়া দেয়। সত্যি বলতে—ওটা একদম চরম বিশৃঙ্খলা।’কেট উইন্সলেট বলেন, প্লাস্টিক সার্জারির এই প্রবণতা শুধু অভিনেত্রীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, সাধারণ নারীরাও বোটক্স কিংবা ঠোঁটে ফিলার নেওয়ার জন্য টাকা জমাচ্ছেন। এটা ভেবে খুবই বিচলিত হয়ে পড়েন।

তিনি বলেন, আমার সবচেয়ে ভালো লাগে, যখন আমার বয়স বোঝা যায়। আমার পরিচিত সবচেয়ে সুন্দরী অনেক নারীই ৭০ বছরের বেশি। আর যা সবচেয়ে কষ্ট দেয়—তরুণীরা জানেই না আসলে সৌন্দর্য বলতে কী বোঝায়।

‘টাইটানিক’-এর সাফল্যের পর কীভাবে তাকে নিষ্ঠুর বডি-শেমিংয়ের মুখে পড়তে হয়েছিল সে কথা জানিয়েছেন কেট উইন্সলেট। গত বছর একটি গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, পুরস্কার মৌসুমে এক জনপ্রিয় বিনোদন-চ্যানেলের উপস্থাপক রেড কার্পেটে তার পোশাক নিয়ে বলেছিলেন—তাকে নাকি গলে পড়ে যাওয়া কারও মতো দেখতে লাগছে।

তিনি বলেন, এটা একজন তরুণী অভিনেত্রীকে এভাবে বলাটা ভীষণ জঘন্য। যে নিজের জায়গা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছে, তাকে এভাবে যারা অপমান করে, তারা কেমন মানুষ বুঝতে হবে?

অভিনেত্রী বলেন, তিনি একসময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি গিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। আমি তাদের বলেছিলাম—আমি চাই এটা তোমাদের মনে গেঁথে থাকুক। শুধু আমার জন্য নয়, বরং যেসব মানুষ এমন নির্যাতনের শিকার হয়, তাদের সবার পক্ষ থেকে এটি বলা দরকার ছিল। পরিস্থিতি ভয়ংকর ছিল, সত্যিই খুব খারাপ।

এর আগে ২০২২ সালে আরেক সাক্ষাৎকারে কেট উইন্সলেট জানিয়েছিলেন, অভিনয় নিয়ে পড়ার সময়ও তাকে বলা হয়েছিল তিনি যেন ‘মোটা’ মেয়ের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য রাজি থাকেন। কিন্তু ‘টাইটানিক’-এর পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়।

হ্যাপি স্যাড কনফিউজড পডকাস্টে অভিনেত্রী বলেন, মানুষ সিনেমার শেষ দৃশ্য নিয়েও তাঁকে বিদ্রূপ করত। বলত— ‘রোজ নাকি এত মোটা ছিল যে জ্যাক দরজার ওপর উঠতে পারেনি। তিনি বলেন, আমি নাকি খুব মোটা ছিলাম। মানুষ এত নিষ্ঠুর ছিল কেন? আমি মোটেও মোটা ছিলাম না। আমি তখন তরুণী, শরীর বদলাচ্ছে, নিজের অস্তিত্ব নিয়ে অনিশ্চিত, ভীষণ ভীত—এ অবস্থায় তারা আরও কঠিন করে তুলেছিল সবকিছু। এটা নিছকই বুলিং এবং সত্যি বলতে সীমা ছাড়ানো নির্যাতন বলে জানিয়েছেন কেট উইন্সলেট।

সূত্র: দ্য সানডে টাইমস

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ