আজ : সোমবার ║ ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : সোমবার ║ ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন অগ্রাধিকারের দাবি

দেশচিন্তা ডেস্ক: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে অগ্রাধিকার হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করাসহ ৩ দফা দাবি জানিয়েছে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন’।

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা ও রাজনৈতিক উদাসীনতার অভিযোগ তুলে চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের নেতারা বলেছেন, এ চুক্তি বাস্তবায়নে দ্রুত জাতীয় সংলাপ ও কার্যকর রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে পার্বত্য চুক্তির ২৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন।

তিনি বলেন, সংবিধানে পরিচয় অস্বীকারের মধ্য দিয়ে পার্বত্য অঞ্চলের জুম্ম আদিবাসী জনগোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন রাজনৈতিক অধিকার ও সাংস্কৃতিক বিকাশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ১৯৯৭ সালে সশস্ত্র সংঘাতের অবসানে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক চুক্তি আদিবাসী জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ, ভূমি অধিকার ও স্থানীয় শাসনব্যবস্থার পুনর্গঠনের পথ খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো চুক্তির মৌলিক ধারাগুলো কার্যত বাস্তবায়ন হয়নি।

তিনি আরো বলেন, চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির পুনর্গঠন আশা জাগালেও ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সভা স্থগিতকরণ এবং টাস্কফোর্সের কার্যক্রম থমকে যাওয়া গভীর উদ্বেগের। এর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরোক্ষভাবে সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।

তাই পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি, মানবাধিকার সুরক্ষা ও জাতীয় স্থিতির স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে চুক্তি বাস্তবায়ন অগ্রাধিকার পাওয়া জরুরি।

অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম এ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ সত্ত্বেও সংস্কার কমিশনগুলোতে আদিবাসী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারের প্রশ্ন উপেক্ষিত হয়েছে। ভূমি, কৃষি ও শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন না করা সরকারের বড় ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতা কাটাতে এখনো সময় আছে।

এ কারণেই পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে। সেনাবাহিনীর গঠনমূলক ভূমিকা, জাতীয় সংলাপ এবং সবার অংশগ্রহণে একটি কার্যকর রোডম্যাপ তৈরি হলে পাহাড়ে শান্তি ও গণতন্ত্রের পথ সুদৃঢ় হবে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সমাপনী বক্তব্যে চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রশ্নটি কখনোই দেশের মূলধারার গণতান্ত্রিক আলোচনায় যথাযথ গুরুত্ব পায়নি। বরং দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত থেকেছে।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা কোনো অঞ্চলের নয়।

এটি সমগ্র বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতি, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নকে জাতীয় ইস্যু হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগ, জাতীয় সংলাপ এবং নতুন গণতান্ত্রিক বন্দোবস্তের অংশ হিসেবে অগ্রাধিকার দেওয়ার এবং চুক্তি বাস্তবায়নে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ