
দেশচিন্তা ডেস্ক: বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) বহরে যুক্ত হওয়া বাল্ক জাহাজ ‘বাংলার প্রগতি’ বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় চীনের জিংজিয়াং ইন্টারন্যাশনাল বার্থ থেকে প্রথম বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু করে জাহাজটি।
এটি বিএসসির ৫০ বছরের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন বলে অবহিত করেছেন বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক।
তিনি বলেন, ‘বাংলার প্রগতি’ জাহাজটি চীনের জিংজিয়াং ইন্টারন্যাশনাল বার্থ থেকে যাত্রা করেছে। জাহাজটি প্রথমে বাঙ্কারিংয়ের (জাহাজের জ্বালানি) জন্য চীনের জৌশানে যাবে। বাঙ্কারিংয়ের পর, জাহাজটি লোডিং বন্দরের দিকে রওনা হবে।’
তবে প্রথম যাত্রায় কী পণ্য বহন করবে? কোন গন্তব্যে যাবে? তার চার্টারার প্রতিষ্ঠান থেকে নিশ্চিত হয়ে জানাবেন বলে জানান তিনি।
বিএসসি জানিয়েছে, ১৯৯ মিটার লম্বা, ৩৩ মিটার প্রস্থ, ১৮ মিটার গভীরতার ‘বাংলার প্রগতি’ জাহাজটি ৬৫ হাজার টন পণ্য পরিবহনে সক্ষম। জাহাজটির প্রধান ইঞ্জিন জার্মান লাইসেন্সের অধীনে নির্মিত, চীন সংযোজিত। পাম্প স্পেনের এবং কম্প্রেসার নরওয়ের। এরই মধ্যে জাহাজটির ট্রায়াল রান হয়েছে চীনে। জাহাজটির নির্মাণকালীন নাম ছিল ‘এসসিএল জেমিনি’। আগে মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকা বহন করলেও এটি বাংলাদেশি পতাকা বহন করে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
সূত্র জানায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর বিএসসি ও সরবরাহকারী/বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান হেলেনিক ড্রাই বাল্ক ভেঞ্চারস এলএলসির মধ্যে সরবরাহ চুক্তি হয়। এর আগে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি জুন ২০২৫ থেকে জুন ২০২৭ পর্যন্ত মেয়াদকালে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পের ডিপিপি গত ৩ জুন অনুমোদিত হয় এবং ৪ জুন আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়।
গ্রিন শিপ কনসেপ্টে নির্মিত জাহাজগুলো নকশা ও প্রযুক্তিগত সমাধান জ্বালানি সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশগত মানদণ্ডসম্মত। আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থা (আইএমও) নির্ধারিত সর্বশেষ পরিবেশগত মানদণ্ড পূরণ করে, যা বৈশ্বিক কার্বন নির্গমন নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জাহাজগুলোর প্রধান ইঞ্জিন থেকে নাইট্রোজেন অক্সাইড নির্গমন কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, পরিবেশ দূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়। জ্বালানি খরচ কম ও অপারেশনাল দক্ষতা বাড়ায়, যা সরাসরি অর্থনৈতিক সাশ্রয়ে প্রভাব ফেলে। হাইড্রোডাইনামিক ড্র্যাগ কমিয়ে জাহাজের গতি বৃদ্ধি ও জ্বালানি সাশ্রয় নিশ্চিত করে। বাতাসের বাধা কমিয়ে গতি ও জ্বালানি সাশ্রয় নিশ্চিত করে, বিশেষত উচ্চগতিতে অপারেশনের সময় কার্যকর।
২০১৮ ও ২০১৯ সালে চীন সরকারের ১ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকায় আর্থিক সহায়তায় তিনটি করে ছয়টি জাহাজ কিনেছিল বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। প্রথমবারের মতো এবারই সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ৯৩৫ কোটি টাকায় দুটি জাহাজ কিনছে। এর মধ্যে ‘এমবি বাংলার প্রগতি’ বহরে যুক্ত হলো।
‘এমবি বাংলার নবযাত্রা’ ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বহরে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। এ দুইটি জাহাজ থেকে বছরে ২০০ কোটি টাকা আয়ের পরিকল্পনা রয়েছে বিএসসির।











