আজ : সোমবার ║ ২৭শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : সোমবার ║ ২৭শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║১১ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ৫ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

খনিজ, জ্বালানি ও বাণিজ্যে মালয়েশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল চুক্তি সম্পন্ন

দেশচিন্তা ডেস্ক: মালয়েশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র বিরল খনিজ, জ্বালানি ও বাণিজ্য খাতে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের (যা প্রায় ৬৩৩ বিলিয়ন রিঙ্গিতের সমান) একটি বিশাল চুক্তির ঘোষণা দিয়েছে। উভয় দেশই ‘যুক্তরাষ্ট্র-মালয়েশিয়া পারস্পরিক বাণিজ্য চুক্তি’ স্বাক্ষরের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার, সরবরাহ শৃঙ্খলের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ নিয়ে একমত হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই চুক্তিটি দুই দেশের রপ্তানিকারকদের জন্য একে অপরের বাজারে ‘অভূতপূর্ব প্রবেশাধিকার’ দেবে এবং ২০০৪ সালে স্বাক্ষরিত মার্কিন-মালয়েশিয়া বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কাঠামো চুক্তির (টিফা) ভিত্তিতে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দুই দেশ চুক্তি কার্যকর করার আগে তাদের নিজ নিজ অভ্যন্তরীণ আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।

বিবৃতি অনুসারে, মালয়েশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্বে বিরল ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের উন্নয়নে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ব্যবসায়িক স্থিতিশীলতা ও উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদি অপারেটিং লাইসেন্স প্রদানও অন্তর্ভুক্ত। আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো, মালয়েশিয়া যুক্তরাষ্ট্রে বিরল খনিজ বা গুরুত্বপূর্ণ খনিজ রপ্তানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা বা কোটা আরোপ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এবং মার্কিন কোম্পানিগুলোর কাছে বিরল ধাতব চুম্বক বিক্রয়ে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে না।

চুক্তির অংশ হিসেবে, মালয়েশিয়া প্রতি বছর ৩.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বার্ষিক আনুমানিক মূল্যে ৫ মিলিয়ন টন তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ক্রয় করবে। এছাড়াও, কয়লা ও টেলিযোগাযোগ সেবা ও পণ্যে ২০৪.১ মিলিয়ন ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৭০ বিলিয়ন ডলারের মূলধনী বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

দুই দেশের কোম্পানির মধ্যে সাম্প্রতিক ও আসন্ন বাণিজ্যিক চুক্তিগুলোর আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার মধ্যে রয়েছে ৩০টি বিমান ক্রয় এবং অতিরিক্ত ৩০টি বিমানের ক্রয় বিকল্প, সেমিকন্ডাক্টর, মহাকাশ যন্ত্রাংশ এবং ডেটা সেন্টার সরঞ্জাম ক্রয়।

হোয়াইট হাউস আরও জানিয়েছে, মালয়েশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পপণ্যের রপ্তানির জন্য বিশেষ সুবিধা দেবে, যার মধ্যে রয়েছে রাসায়নিক পদার্থ, যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, ধাতু ও যাত্রীবাহী যানবাহন, এবং কৃষিপণ্যের মধ্যে রয়েছে দুগ্ধজাত পণ্য, ফল-সবজি, পোল্ট্রি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, পানীয়, শুকরের মাংস, চাল ও ইথানল। এর বিপরীতে, ওয়াশিংটন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, মালয়েশিয়ান উৎসের পণ্যের ওপর ১৯ শতাংশ পারস্পরিক শুল্কহার বজায় থাকবে, যা ২০২৫ সালের ২ এপ্রিলের নির্বাহী আদেশ ১৪২৫৭ অনুযায়ী নির্ধারিত।

এছাড়া, ২০২৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বরের নির্বাহী আদেশ ১৪৩৪৬-এর এনেক্স থ্রির তালিকাভুক্ত পণ্যসমূহকে শূন্য শতাংশ শুল্কহার দেওয়া হবে বলে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে। মালয়েশিয়া অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত শিল্পখাতে অশুল্ক বাধা দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, বিশেষ করে মার্কিন খাদ্য ও কৃষিপণ্যের বাজারে প্রবেশে বাধা অপসারণ ও প্রতিরোধের জন্য তারা কাজ করবে।

উভয় দেশ অর্থনৈতিক ও জাতীয় নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার, সরবরাহ শৃঙ্খল উদ্ভাবন বৃদ্ধি, কর ফাঁকি রোধ এবং বিনিয়োগ সুরক্ষা ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছে। এছাড়াও, মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ও ব্যাংক নেগারা মালয়েশিয়া পারস্পরিক মুদ্রানীতি সম্পর্কিত সমঝোতা চুক্তি চূড়ান্ত করতে আলোচনা চালাচ্ছে, যাতে উভয় দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ন্যায্য ও ভারসাম্যপূর্ণ থাকে।

সূত্র: রয়টার্স

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ