আজ : মঙ্গলবার ║ ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : মঙ্গলবার ║ ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ২২শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সব ন্যাটো দেশই এখন রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করছে: পুতিন

দেশচিন্তা ডেস্ক: ইউরোপের ক্রমবর্ধমান সামরিকীকরণে কঠোর জবাবের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, ইউরোপ ক্রমাগত সামরিকীকরণের পথে এগোচ্ছে এবং এর জবাবে রাশিয়া ‘গুরুত্বপূর্ণ ও কঠোর’ পদক্ষেপ নেবে।

একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ন্যাটো আক্রমণের নামে রাশিয়াকে নিয়ে যে প্রচারণা চলছে, তা আসলে ‘অর্থহীন হিস্টেরিয়া’। এছাড়া সব ন্যাটো দেশই এখন রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

বৃহস্পতিবার রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সাগরপাড়ের শহর সোচিতে পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক এক ফোরামে পুতিন বলেন, “তারা (ন্যাটো) নিজেরাই বিশ্বাস করে না যে রাশিয়া ন্যাটোতে হামলা চালাবে। যদি সত্যিই বিশ্বাস করে, তাহলে তারা অবিশ্বাস্যভাবে অযোগ্য, কারণ এই বাজে কথায় আস্থা রাখা যায় না। আর যদি না বিশ্বাস করে, তাহলে তারা কেবল অসৎ।”

ইউরোপের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর প্রবণতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, রাশিয়া পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং পাল্টা জবাব দেবে দ্রুতই। পুতিন উদাহরণ টেনে বলেন, “জার্মানিতে বলা হচ্ছে তাদের সেনাবাহিনী ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী হবে। খুব ভালো। আমরা সেটা শুনেছি এবং দেখছি এর মানে আসলে কী।”

তিনি আরও বলেন, “রাশিয়া কখনো দুর্বলতা বা দ্বিধা দেখাবে না। যা ঘটছে, আমরা তা উপেক্ষা করতে পারি না।”

২০২২ সালে ইউক্রেনে আক্রমণের পর থেকে রাশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্ক তলানিতে নেমে গেছে। এর ফলে ইউরোপ তাদের প্রতিরক্ষা জোরদার করছে। ডেনমার্কের আকাশে ড্রোন ও এস্তোনিয়া এবং পোল্যান্ডের আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনায় ইউক্রেন যুদ্ধ সীমান্ত পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা আরও বেড়েছে।

ইউক্রেন ও কিছু ন্যাটো মিত্র অভিযোগ করেছে, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে অন্য দেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে। তবে মস্কো তা অস্বীকার করে বলছে, ইউরোপ কেবল ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে। পুতিন অভিযোগ করেন, ইউরোপ ইচ্ছাকৃতভাবে ‘হিস্টেরিয়া’ তৈরি করছে যাতে সামরিক ব্যয় বাড়ানো যায়। তিনি বলেন, “শান্ত হোন, রাশিয়া কোনো হুমকি নয়।”

পুতিন বলেন, ইউরোপ ‘নিরন্তর উত্তেজনা বাড়ানোর’ নীতি অনুসরণ করছে এবং এর কারণেই ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠা ব্যর্থ হচ্ছে। তার দাবি, “সব ন্যাটো দেশই এখন আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে এবং তারা আর তা লুকাচ্ছে না। গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ ও অস্ত্র পাঠানোর মাধ্যমে তারা বাস্তবে যুদ্ধেই অংশ নিচ্ছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রশংসা করে পুতিন জানান, আগস্টে আলাস্কায় অনুষ্ঠিত শীর্ষ বৈঠকে তার সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান ও দুই দেশের সম্পর্ক পুনরায় ভালো করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, “ট্রাম্প এমন একজন মানুষ, যিনি কথা শুনতে পারেন।”

তবে এখন পর্যন্ত মস্কো ইউক্রেনের সঙ্গে কোনো সমঝোতার ইঙ্গিত দেয়নি। বরং তাদের অবস্থান স্পষ্ট— কিয়েভকে অবশ্যই ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার আশা ত্যাগ করতে হবে এবং কিছু ভূখণ্ড ছাড়তে হবে।

এদিকে পুতিন ইউক্রেনকে সতর্ক করে বলেন, রাশিয়ার দখলে থাকা জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় হামলা চালিয়ে ইউক্রেন বিপজ্জনক খেলা খেলছে। তিনি ইঙ্গিত দেন, এর জবাবে রাশিয়া ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণাধীন পারমাণবিক স্থাপনায় পাল্টা হামলা চালাতে পারে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ