
দেশচিন্তা ডেস্ক: চট্টগ্রামকে ক্লিন সিটিতে রূপান্তর করতে ল্যান্ডফিলের (বর্জ্য ফেলার নির্ধারিত স্থান) জন্য জমি কেনা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
সিটি করপোরেশনের সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে গঠিত কমিটির বিশেষ সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র এ কথা জানান।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নগরীর টাইগারপাসে চসিক কার্যালয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ল্যান্ডফিল স্থাপন, নগর উন্নয়ন ও জনদুর্ভোগ কমানোর নানা পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জে রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হলেও চসিক সর্বোচ্চ ২,২০০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করতে পারছে। বাকি প্রায় ৮০০ টন বর্জ্য নানা উপায়ে খাল-নালা হয়ে কর্ণফুলি নদীতে গিয়ে পড়ছে, যা মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষণ করছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় চসিক নতুন একটি ল্যান্ডফিল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চসিক মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের বর্তমান দুটি ডাম্পিং স্টেশন ধারণ ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। যেকোনো সময় সেগুলোতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় চসিক ইতিমধ্যে নতুন একটি ল্যান্ডফিল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এজন্য ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানার জঙ্গল দক্ষিণ পাহাড়তলী মৌজায় প্রায় ৫০ একর জমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর মধ্যে ৯ দশমিক ৫০ একর জমি ইতিমধ্যে ক্রয় করা হলেও মালিকদের অনীহার কারণে বাকি জমি ক্রয় সম্ভব হয়নি। ফলে বিকল্প হিসেবে একই মৌজার পার্শ্ববর্তী সমতল ও টিলা শ্রেণির প্রায় ৪০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে চিন্তিত। নতুন ল্যান্ডফিল না হলে নগরীর পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে। নতুন ল্যান্ডফিল হলে ভবিষ্যতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি হবে। ইতিমধ্যে কোরিয়া, জাপান ও সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন কোম্পানি চসিকের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা করেছে। তবে শর্ত হিসেবে তারা ন্যূনতম ৪০ একর জমি চেয়েছে।
মেয়র শাহাদাত আরও বলেন, চট্টগ্রামকে ক্লিন, গ্রিন, হেলদি ও সেফ সিটি গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। এজন্য সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন চসিকের সচিব মো. আশরাফুল আমিন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. গোলাম মুরশেদ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট রুবাইয়াত তাহরীম সৌরভ, বন অধিদপ্তরর সহকারী সংরক্ষক মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (বিআইডব্লিউটিএ) মো. জাহিদুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উপ-পরিচালক মনছুর আলী চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী একেএম মামুনুল বাশরী, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।