
দেশচিন্তা ডেস্ক: চিটাগাং ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং ক্লাবের (সিইউডিসি) আয়োজনে ৩ মাসব্যাপী প্রাথমিক বিতর্ক ও কর্মশালা চবি বিজ্ঞান অনুষদের গ্যালারি-২ এ আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুর দুইটায় উদ্বোধন করেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, আমরা প্রশাসনের দায়িত্ব নেয়ার পর যে কয়েকটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়েছি, সেগুলোর মধ্যে একটি হলো শিক্ষাসহায়ক কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা। আমরা মনে করি, শুধু পুঁথিগত বিদ্যা আর পাশ করে সার্টিফিকেট পেলেই আসল উদ্দেশ্য পূরণ হয় না—শিক্ষার্থীদের জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষাসহায়ক কার্যক্রম খুবই প্রয়োজনীয়। বিদেশে উচ্চ শিক্ষা বা যেকোনো কাজে এগুলো বেশ কাজে আসে। এদিক থেকে সিইউডিসি ভালো উদ্যােগ নিয়েছে।
উপাচার্য বিতর্কের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন, কথা বলা একটা শিল্প, বিতর্ক করাও একটা শিল্প। বিতর্ক চর্চা করার বিষয়। বিতর্কে যুক্তির মাধ্যমে সত্যে উপনীত হওয়া যায়। যুক্তির মাধ্যমে মিথ্যা থেকে বাঁচা যায়। এজন্য বিতর্ক চর্চা করতে হবে, পাশাপাশি পড়াশোনা ঠিক রাখতে হবে। কারণ শিক্ষার্থীদের মূল দায়িত্ব হচ্ছে ভালো করে পড়ালেখা করা এবং একাডেমিক এক্সিলেন্স অর্জন করা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী, সিইউডিসির মডারেটর ও সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মো. আবদুল মান্নান, তথ্য ও ফটোগ্রাফি শাখার প্রশাসক ও যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারহানা রুমঝুম ভূঁইয়া।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী বলেন, যারা ডিবেট করে তাদের অনেক পড়াশোনা করতে হয়, যুক্তি দিয়ে প্রতিপক্ষকে পরাজিত করতে হয়। এজন্য বিভিন্ন বিষয়ে বেশি বেশি পড়াশোনা করতে হবে। আর সময়ের কাজ সময়ে করতে হবে। একাডেমিক পড়াশোনা ও শিক্ষাসহায়ক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
ড. মোঃ শহীদুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে জ্ঞান চর্চা ও সৃজনের জায়গা। নতুন নতুন জ্ঞান চর্চা ও গবেষণা করতে হবে। যুক্তিবাদী হতে হবে। নিজের চিন্তাশক্তি কাজে লাগিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এতে সভাপতিত্ব করেন সিইউডিসির আহ্বায়ক নোমান ইবনে মোসলেহ উদ্দিন এবং সঞ্চালনা করেন ওমর ফায়াজ ও জেনিফার জান্নাত। এ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতর্ক, জনবক্তৃতা ও নেতৃত্ব বিষয়ক একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করা। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা এশিয়ান পার্লামেন্টারি, ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি ও বারোয়ারি বিতর্ক ফরম্যাট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে। এর পাশাপাশি প্রেজেন্টেশন দক্ষতা, অনুষ্ঠান সঞ্চালনা ও প্যানেল আলোচনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
এ কর্মসূচিতে তত্ত্বীয় আলোচনার পাশাপাশি হাতে-কলমে অনুশীলনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আয়োজকরা আশা করছেন, এ প্রশিক্ষণ শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী বিতার্কিক, দক্ষ যোগাযোগকারী ও ভবিষ্যতের নেতা হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করবে। এ উদ্যোগটি শিক্ষার্থীদের মাঝে মুক্তচিন্তা ও যুক্তিনির্ভর আলোচনার একটি সুস্থ পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করবে।