
দেশচিন্তা ডেস্ক: উন্নত দেশগুলোতে লুটপাটের বিপুল অর্থ পাচার রোধে কঠোর আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামো তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) চেয়ার ফ্রাঁসোয়া ভালেরিয়ানের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বেশিরভাগ সময় আমরা জানি এই লুট করা অর্থ কোথা থেকে আসছে। তারপরও আমরা একে বৈধ অর্থ স্থানান্তর হিসেবে মেনে নিই, কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
তিনি বলেন, অর্থপাচার ঠেকাতে বিদ্যমান বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছে, যেখানে এসব অর্থকে স্বাগত জানানো এবং প্রভাবশালী লবিবাজদের মাধ্যমে বৈধতা দেওয়া হয়।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অর্থপাচারের তথ্য তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বৈরাচারী শাসনামলে প্রতি বছর ১৬ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ থেকে পাচার হতো।
ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ও আর্থিক নিয়মকানুনের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, লুট করা অর্থ অফশোর দ্বীপপুঞ্জ ও বহু ধনী দেশে লুকিয়ে রাখতে এসব নিয়মকানুন ‘সহজ করে তোলে’।
টিআই চেয়ার ফ্রাঁসোয়া ভালেরিয়ান অন্তর্বর্তী সরকারের লুট করা সম্পদ উদ্ধারের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, অর্থপাচার রোধে আরও কার্যকর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং শক্তিশালী আর্থিক নিয়মকানুন প্রয়োজন। আমাদের আরও শক্তিশালী আন্তর্জাতিক বিধি এবং উন্নত বাস্তবায়ন দরকার।
প্রধান উপদেষ্টা কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ‘দ্বৈত মানদণ্ডের’ নিন্দা জানান, যারা জেনেশুনেই অবৈধ অর্থ সংরক্ষণ করে।
টিআই-এর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তারা যেন তাদের কণ্ঠস্বর আরও জোরালো এবং একটি আন্তর্জাতিক ফোরাম আহ্বান করতে সহায়তা করে। যেখানে বাধ্যতামূলক আন্তর্জাতিক আইন প্রণীত হবে, যেন লুট করা অর্থ নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে না পায়।
এসময় টিআই বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টিআইবি ও যুক্তরাজ্য চ্যাপ্টারের যৌথ অ্যাডভোকেসি শেখ হাসিনার সহযোগীদের অর্জিত সম্পত্তি জব্দে ভূমিকা রেখেছে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক জ্যেষ্ঠ সচিব ও সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।