
দেশচিন্তা ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষের ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় মোট ১৩টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে চবি মেডিকেল সেন্টারকে আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল ও ২টি অ্যাম্বুলেন্স ক্রয়ে ডিপিপি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টায় উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে ৫৬৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গৃহীত ১৩ সিদ্ধান্ত হলো–
১. গত শনিবার ও রোববার চবি শিক্ষার্থীদের উপর স্থানীয় দুষ্কৃতকারী কর্তৃক হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আহত সকলের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহানুভূতি জ্ঞাপন করে।
২. আহত সকল শিক্ষার্থীর উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা ও ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বহন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৩. উদ্ভূত ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের একটি তালিকা প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৪. সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানের স্বার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি মডেল থানা স্থাপন, রেলগেটে নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাটল ট্রেনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৫. যেসব ভবন বা কটেজে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বসবাস করে, সেসব ভবন বা কটেজের মালিকদের সাথে আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের ঘরভাড়াসহ অন্যান্য সমস্যাজনিত অসন্তোষ নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৬. বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ২টি অ্যাম্বুলেন্স ক্রয় ও ৫০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালে রূপান্তরের জন্য ডিপিপি প্রণয়ন করে সরকারের নিকট দাখিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৭. বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার লক্ষ্যে ১০তলা বিশিষ্ট ৫টি ছাত্র হল এবং ৫টি ছাত্রী হল নির্মাণের লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডিপিপি প্রস্তুত করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাখিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৮. বিদ্যমান আবাসিক হলগুলো সংস্কার করে শিক্ষার্থীদের বসবাস উপযোগী করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৯. বিদ্যমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন রাখার ও টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
১০. গত শনিবার ও রোববার সংঘটিত ঘটনা তদন্ত করে এর কারণ অনুসন্ধান ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনসহ দোষীদের চিহ্নিত করার জন্য একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
১১. গত শনিবার ও রোববার সংঘটিত ঘটনা তদন্ত করে এর কারণ অনুসন্ধান, দোষীদের চিহ্নিতকরণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
১২. বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেকহোল্ডারদের সাথে পর্যায়ক্রমে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
১৩. উদ্ভূত ঘটনায় স্থানীয় নিরীহ মানুষের সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে তা পূরণের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং পাশাপাশি উক্ত কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের সাথে সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এর আগে গত শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে গতকাল বিকেল ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে প্রায় চারশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।