আজ : সোমবার ║ ১লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : সোমবার ║ ১লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║১৭ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ৯ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ঢাবিতে ছাত্রীদের ইবাদতের জন্য কার্জন হলে উপযুক্ত পরিবেশ চায় শিবির

দেশচিন্তা ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে শিবির সমর্থিত প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট ৩৬ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে।

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের ইশতেহারগুলো ঘোষণা করেন প্যানেলের সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদপ্রার্থী মহিউদ্দিন খান।

প্যানেলটির ৩৬ দফা ইশতেহার হলো—
১/ ডাকসুকে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারভুক্ত করা।
২/ ঢাবিকে ফ্যাসিবাদীদের দোসর মুক্ত করা।
৩/ প্রথম বর্ষ থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বৈধ সিট নিশ্চিত করা।
৪/ নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য নিশ্চিতকরণে হল ও অন্যান্য ক্যান্টিন-ক্যাফেটেরিয়াতে পুষ্টিবিদের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে পুষ্টিকর খাবারের মেনু প্রণয়ন এবং ৩ মাস অন্তর খাবার মান পরীক্ষা করা।
৫/ নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবহন নিশ্চিত করা।
৬/ ছাত্রীদের জন্য ছাত্রী হলে প্রবেশের বিধিনিষেধ শিথিল করা।
৭/ ছাত্রীদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা করা।
৮/ কমনরুমে নারী কর্মচারী নিয়োগ করা।
৯/ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সেবাকেন্দ্রিক লাল ফিতার দৌরাত্ম্য নিরসন করে পেপারলেস রেজিস্ট্রার বিল্ডিং গড়ে তোলা।
১০/ ডাকসু ওয়েবসাইট উন্নতকরণ এবং অ্যাপের মাধ্যমে ‘Access to Resources’ নিশ্চিত করা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করা।
১১/ শিক্ষক মূল্যায়ন পদ্ধতিকে আরো কার্যকর করে উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আদলে ‘মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম’ চালু করা। প্রত্যেক ফ্যাকাল্টিতে ই-লাইব্রেরি ও কম্পিউটার সেন্টার স্থাপন করা।
১২/ শিক্ষার্থীদের নিয়ে রিসার্চ-বিষয়ক কর্মশালা করা।
১৩/ কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, বিজ্ঞান লাইব্রেরি, হল লাইব্রেরি ও পাঠকক্ষ এবং ডিপার্টমেন্টের সেমিনার কক্ষ সম্প্রসারণ করা।
১৪/ সফট স্কিল ডেভেলপমেন্টের ওপর কর্মশালা আয়োজন করা। উচ্চশিক্ষা ও ক্যারিয়ার-বিষয়ক সেমিনার, কর্মশালার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে জব ফেয়ার আয়োজন করা।
১৫/ অ্যালামনাই নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়নে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
১৬/ কেন্দ্রীয় মসজিদ, হল মসজিদ, মন্দির ও অন্যান্য উপাসনালয়সমূহের অবকাঠামোগত সংস্কার ও উন্নয়ন করা। ছাত্রীদের ইবাদতের জন্য অ্যাকাডেমিক এরিয়া বিশেষ করে কার্জন হল এলাকায় উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতকরণ।
১৭/ মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ও কাউন্সেলিং সেবার পরিসর বৃদ্ধি করা।
১৮/ বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার ও সেবা আধুনিকীকরণের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি করা এবং DUMC অ্যাপ চালুর মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবাকে আরো বেশি সহজলভ্য করা এবং নারী চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা।
১৯/ সারাদেশে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের সাথে MoU করার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও তার অভিভাবকদের চিকিৎসাব্যয়ের ওপর বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করা। স্বাস্থ্যবীমা-কেন্দ্রিক ভোগান্তি নিরসনে প্রশাসন ও বীমা প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করা। হলভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করা। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনসাপেক্ষে ফার্মেসি স্থাপন করা।
২০/ Physically Challenged শিক্ষার্থীদের জন্য অদম্য মেধাবী শিক্ষাবৃত্তি চালু করা।
২১/ আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটকে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উন্নীত করা। প্রত্যেক ভাষায় অন্তত একজন বিদেশি শিক্ষক চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া। ল্যাংগুয়েজ রিসার্চ সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা।
২২/ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে ল্যাবগুলোতে উন্নত ও আধুনিক যন্ত্রপাতি নিশ্চিত করা। সায়েন্স ওয়ার্কশপ, CARS এবং CARASS-এর আধুনিকায়ন নিশ্চিত করা।
২৩/ ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে বহিরাগত যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, ভাসমান হকার ও ভবঘুরেদের উচ্ছেদ করা। ক্যাম্পাস এরিয়ায় রেজিস্টার্ড রিকশা প্রবর্তন ও ভাড়া তালিকা প্রণয়ন করা।
২৪/ যৌন হয়রানি ও সাইবার-বুলিং প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন করা। যৌন নির্যাতন-বিষয়ক অভিযোগ সেল শক্তিশালীকরণ ও আইনি সহায়তা প্রদান।
২৫/ ক্যাম্পাসের অ্যাকাডেমিক ভবনগুলোতে ফ্রি মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন প্রোডাক্ট সহজলভ্য করা।
২৬/ হলভিত্তিক সমস্যা সমাধানে কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা এবং ক্যাম্পাস অমবুডসপার্সন নিয়োগ করা। নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করা ও ভুক্তভোগীদের সাপোর্টের জন্য ভিক্টিম সাপোর্ট সেল গঠন।
২৭/ বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত মেইলের অ্যাক্সেসিবিলিটি বাড়ানো। ই-মেইলের মাধ্যমে বিভিন্ন জার্নাল, সাময়িকী এবং ওয়েবসাইটে অ্যাক্সেস রাখা এবং বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক অ্যাপের প্রিমিয়াম অ্যাক্সেস নিশ্চিত করা। অ্যালামনাইদের জন্য অফিশিয়াল ই-মেইলের ব্যবস্থা করা।
২৮/ জরাজীর্ণ বাসগুলো বাদ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় নতুন বাস ক্রয় করা। মোবাইল অ্যাপে রিয়েলটাইম ট্র্যাকিংয়ের ব্যবস্থা করা। বাসের সংখ্যা ও ট্রিপ বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন রুট বৃদ্ধি করা। অভ্যন্তরীণ পরিবহন ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য শাটল চালু করা।
২৯/ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও আইনি সহায়তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সারাদেশের সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও আইনজীবীদের অন্তর্ভুক্ত করে লিগ্যাল হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা।
৩০/ শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের অবকাঠামোগত আধুনিকায়ন, এক্সপার্ট কিউরেটরের মাধ্যমে মাঠ পরিচর্যা এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিযোগিতা আয়োজন করা। হল পর্যায়ে শারীরিক শিক্ষা কার্যক্রমের আধুনিকায়ন ও ইনডোর গেমসের আওতা বাড়ানো।
৩১/ টিএসসির অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা। টিএসসির নিকটবর্তী ছাত্রী স্কুল ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের অবস্থান বিবেচনায় সাউন্ডবক্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়ন।
৩২/ Physically Challenged শিক্ষার্থী উপযোগী ক্লাসরুম ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম নিশ্চিত করা। তাদের জন্য ওয়াশরুমে বিশেষ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
৩৩/ নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সেলফ ডিফেন্স প্রশিক্ষণের আয়োজন করা।
৩৪/ হলগুলোতে কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং কর্মচারী মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করা।
৩৫/ পরিবেশ ও প্রতিবেশের সংরক্ষণ, শব্দ দূষণ রোধ, সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস গঠন করা। ক্যাম্পাসের পরিচ্ছন্নতা রক্ষার্থে প্রতি মাসের শেষ সপ্তাহে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা।
৩৬/ সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক আধিপত্যবাদ মোকাবিলায় এই অঞ্চলের মানুষের নিজস্ব সংস্কৃতির বিকাশে কাজ করা।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ