
দেশচিন্তা ডেস্ক: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, চট্টগ্রাম জেলার, কোতোয়ালী থানার সম্মেলন শুক্রাবার (২২ আগস্ট), বিকাল ৪ টায় হাজারীগলিস্থ পার্টি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সিপিবি কোতোয়ালী থানার সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ সেনের সঞ্চালনাই বক্তব্য রাখেন, সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মৃণাল চৌধুরী, সিপিবি চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি অধ্যাপক অশোক সাহা, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো: জাহাঙ্গীর, সিপিবি জেলা কমিটির সদস্য ডা: আরিফ বাচ্চু, জাবেদ চৌধুরী, নাবিলা তানজিনা প্রমুখ।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা ছিল রাষ্ট্রের কিছু প্রয়োজনীয় সংস্কার, হত্যাকারীদের বিচার ও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর। কিন্তু গত ১ বছরে আমরা দেখলাম, সরকার সংস্কারের নামে অহেতুক কালক্ষেপণ করছে। বিচার প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগগ্রগতি তেমন নেই। সংবিধান সংস্কারের নামে রাষ্ট্রিয় চার মূলনীতি মুছে ফেলার চক্রান্ত চলছে। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে এই বাংলাদেশে একটি বিভাজনের রাজনীতি শুরু করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সহযোগিতায় মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তিকে বাংলাদেশে পুণ:প্রতিষ্ঠা করার এক নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এ অবস্থায় নির্বাচন আদৌ হবে কী না, সেটা নিয়ে মানুষের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। জনগণ হতাশ হতে শুরু করেছে। ম্বৈরাচার আওয়ামী লীগের আমলে ভোটাধিকার বঞ্চিত জনগণ যদি দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে না পারে, সরকার যদি নির্বাচন নিয়ে কৌশলের খেলা অব্যাহত রাখে, তাহলে দেশ আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে, যা কাম্য নয়। আমরা আশা করি, সরকার দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবে এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে বিদায় নেবে।
বক্তারা আরো বলেন, জোরপূর্বক নিজস্ব ও বহি:শক্তির স্বার্থের বিভিন্ন এজেন্ডা দেশের মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে দেয়া, আরাকানকে করিডোর দেয়াসহ এখতিয়ার বর্হিভূত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে আমরা সরকারকে ব্যস্ত দেখতে পাচ্ছি। এর মধ্যে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। মব সন্ত্রাসে জনজীবন অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছে। রাস্তাঘাটে পিটিয়ে নির্বিচারে মানুষ খুন করা হচ্ছে। বাজারে দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলেছে।
বক্তারা সাম্রাজ্যবাদের রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষার নানা ধরনের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন এবং আন্দোলন গড়ে তোলা এবং বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বামশক্তিকে শক্তিশালী করার আহবান জানান।
সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে প্রদীপ ভট্টাচার্যকে সভাপতি এবং জাবেদ চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ৯ সদস্যের কমিটি নির্বাচিত করা হয়।