
দেশচিন্তা ডেস্ক: রাত পোহালেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় মোট ৩৯টি কেন্দ্রে ১৭৮টি বুথে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দুই দশক পর প্রথমবারের মতো অধিকার আদায়ের প্রতিনিধিকে নির্বাচনের সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা।
পুরো নির্বাচনকে উৎসবের রূপ দিতে প্রস্তুত ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির। আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠলেও, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস নির্বাচন কমিশনারের। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে থেকেও আবাসন সুবিধাহীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের বহুল আকাঙ্ক্ষিত নির্বাচন।
জুলাই-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে জকসুর দাবিতে বারংবার সোচ্চার ছিলেন শিক্ষার্থীরা। অবশেষে ৩০ তারিখে অপেক্ষার অবসান। ভোটের আগমুহূর্তে ক্যাম্পাসজুড়ে উচ্ছ্বাস ও প্রত্যাশা।
শিক্ষার্থীরা জানান, এত বছর পর জকসু হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা চান নির্বাচন সুষ্ঠু হোক। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে চান তারা। জকসুর মাধ্যমে এত বছর ধরে চলে আসা আবাসন সমস্যারও সমাধান হবে বলে আশা শিক্ষার্থীদের। শুধু শিক্ষার্থীরাই নন, দাবি আদায়ের এ যাত্রায় নেতৃত্ব দিতে মুখিয়ে রয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলোও।
ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, সবাই এনজয় করছে। প্রার্থীরা সবার কাছে যাচ্ছে, ভোট চাচ্ছে। সবাই সবাইকে সাদরে গ্রহণ করছে, কথা বলছে। খুবই ফেস্টিব মুডে আছে। ক্যাম্পাসের জন্য সুন্দর একটা আবহ বিরাজ করছে।
ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী একেএম রাকিব বলেন, এখন পর্যন্ত সবাই এনজয় করছে। আশা করছি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এটা পূর্ণতা পাবে।
এদিকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছেন একাধিক পক্ষ। বড় রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, কয়েক ঘণ্টায় যেরকম কালো টাকার ছড়াছড়ি তা উৎসবের আমেজটাকে পুরো ধ্বংস করে দিয়েছে।
সব অভিযোগ ও শঙ্কার মধ্যেও ইতিবাচক ভাবনায় বিশ্বাস রাখার আহবান নির্বাচন কমিশনারের। জানালেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন।
জকসু প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের জন্য ৩৮টি এবং ১টি হল সংসদের জন্য। মোট ৩৯টি কেন্দ্র আছে। আচরণবিধি লঙ্ঘন সম্পর্কে প্রথম থেকেই টুকটাক অভিযোগ আমাদের কাছে আসছে। আমরা অনেকগুলো খতিয়ে দেখেছি, কথা বলেছি তাদের সঙ্গে। শেষ মুহূর্তে এসেও দুয়েকটা অভিযোগ আসছে। আমি সকলকে এটা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার অনুরোধ করবো।
কমিশন সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় সংসদের জন্য ৩৮টি এবং হল সংসদের জন্য ১টি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি ১০০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটি করে ভোটগ্রহণ বুথ থাকবে। ভোটগ্রহণ শেষে মেশিনের মাধ্যমে ভোট গণনা করা হবে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। সব মিলিয়ে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে প্রবেশসংক্রান্ত বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন-কেবল অনুমোদিত ব্যক্তি, ভোটার, শিক্ষক এবং নির্বাচন কাজে বিশেষভাবে অনুমোদিত ব্যক্তিরাই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। এজন্য নির্ধারিত পরিচয়পত্র বহন বাধ্যতামূলক। পরিচয়পত্র সংগ্রহের বিস্তারিত তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে নোটিশের মাধ্যমে জানানো হবে।
ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার: নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল থেকে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আনসার, র্যাব সদস্যদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।












