আজ : বুধবার ║ ১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : বুধবার ║ ১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ২৩শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

নারীরা শিগগির কর্মস্থলে সন্তান নিয়ে যাওয়ার আইনি অধিকার পাবেন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

দেশচিন্তা ডেস্ক: নারীরা শিগগির কর্মস্থলে সন্তান নিয়ে যাওয়ার আইনি অধিকার পাবেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। অন্তর্বর্তী সরকার এ লক্ষ্যে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানের হোটেল ক্রাউন প্লাজায় আয়োজিত ‘রেকগনিশন: এ ফার্স্ট স্টেপ টুয়ার্ডস জেন্ডার ইকুয়ালিটি’ শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

নারীরা ঘরে অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজের ভার বহন করেও কর্মক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন—এমন মন্তব্যও উঠে আসে সংলাপে।

সংলাপে বক্তারা বলেন, দেশের প্রকৃত উন্নয়ন তখনই সম্ভব, যখন নারীদের ঘরের কাজসহ সব ধরনের অবদান রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পাবে।

সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, প্রত্যেক অফিসে বাধ্যতামূলক ডে কেয়ার সুবিধা বাস্তবায়ন ভবিষ্যতের জন্য একটি পথপ্রদর্শক উদ্যোগ হবে।

সংলাপে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হাউসহোল্ড প্রোডাকশন স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্ট রিপোর্ট তুলে ধরা হয়। রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজের মোট মূল্য ৬ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ। এর মধ্যে নারীদের অবদান ৮৫ শতাংশ, যা জিডিপির ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশের সমান।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, আমরা এমন একটি সমাজের স্বপ্ন দেখেছি, যেখানে নারীরা ঘরে সম্মানিত হবেন এবং পারিবারিক সহিংসতা থেকে মুক্ত থাকবেন। আজ সরকারের স্বীকৃতি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এক বিশাল অগ্রগতি।

মূল প্রবন্ধে এমজেএফ-এর পরিচালক বনশ্রী মিত্র নিয়োগী বলেন, এ ধরনের সমীক্ষা এখনো আন্তর্জাতিক দাতাদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। ভবিষ্যতে এর ধারাবাহিকতা রক্ষায় সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে।

অনুষ্ঠানে নারী উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। এডিবি-এর প্রতিনিধি নাসীবা সেলিম বলেন, আজও সমাজে গৃহস্থালি কাজ নারীর দায়িত্ব বলে ধরে নেওয়া হয়। এই মানসিকতা বদলানো জরুরি।

ইউএন উইমেন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ গীতাঞ্জলি সিং বলেন, নারী ও পুরুষ উভয়ের যৌথ অংশগ্রহণে অবৈতনিক যত্নমূলক কাজের ক্ষেত্রেই হবে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন।

কানাডিয়ান হাইকমিশনের প্রতিনিধি স্টেফানি সেন্ট-লরেন্ট ব্রাসার্ড বলেন, গৃহস্থালি কাজ কোনো খরচ নয়, এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি বিনিয়োগ।

নাগরিকতা সিইএফ-এর ক্যাথারিনা কুনিগ জানান, ভবিষ্যতে তারা আরও সচেতনতামূলক কর্মসূচি পরিচালনার পরিকল্পনা করছেন।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত সচিব কাজী গোলাম তৌসিফ বলেন, নারী ও পুরুষ মিলে কাজ করলেই সমাজে উন্নয়ন টেকসই হবে। এটিই আমাদের মূলমন্ত্র হওয়া উচিত।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে এমজেএফ-এর গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারপারসন পরভীন মাহমুদ বলেন, নারীদের অবৈতনিক কাজের স্বীকৃতি এমজেএফ-এর দীর্ঘমেয়াদি অ্যাডভোকেসির ফল। ‘মর্যাদায় গড়ি সমতা’ প্রচারাভিযান এই অর্জনের পথ তৈরি করেছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ