
প্রতিবেদক, দেশচিন্তা
কক্সবাজারের সাগরবেষ্টিত দ্বীপ মহেশখালীর উত্তরের প্রাচীন দাঁড়াদিয়া খাল দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের দখলে। প্রায় ৪৫ বছর আগে স্থানীয় কিছু দখলদার খালটির দুই প্রান্তে বাঁধ নির্মাণ করে খালের স্বাভাবিক জোয়ার-ভাটা ও নৌচলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে খালটি একটি কৃত্রিম বদ্ধ জলাধারে রূপান্তরিত হয়েছে, যেখানে চলছে চিংড়ি ও লবণ চাষ।
সরকারি রেকর্ডে খাল হিসেবেই থাকা এ সম্পত্তি দখল করে বাঁধ ও নদীশাসনের মাধ্যমে খালের প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন জেলে, কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষ, যাদের বিকল্প পথে চলাচলে সময় ও অর্থ খরচ বেড়েছে।
পরিবেশবাদী সংগঠন মহেশখালী উন্নয়ন ফোরাম ও গ্রামীণ পরিবেশ উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম বলছে, খালটি কেবল পরিবেশ নয়, ঐতিহাসিকভাবেও চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার সীমান্ত নির্ধারক ছিল। খাল দখলের ফলে বদরখালী থেকে মাতারবাড়ি পর্যন্ত নৌপথ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
সরকারি খাস খাল এখন ব্যক্তিমালিকানার ঘের!
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উত্তর নলবিলা মৌজার বিএস ১ নম্বর খতিয়ানের ২০১ ও ২০২ দাগে মোট ৪৫.৫৩ একর জমি “খাল” শ্রেণিতে রেকর্ডভুক্ত রয়েছে জেলা প্রশাসকের নামে। খালের পূর্বমুখ ছিল বদরখালী পাড়ে এবং শেষপ্রান্তে এটি গিয়ে মিশেছে মাতারবাড়ির কুহেলিয়া নদীতে।
দখলদারদের কারণে অতীতে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। বর্তমানে বাঁধ দিয়ে বহু অংশ ভরাট করায় পরিবেশ ও নৌ নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে।
পরিবেশ রক্ষায় দখলদারদের উচ্ছেদ দাবি
মহেশখালী উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন বলেন,
“জলবায়ু পরিবর্তনের এই যুগে প্রাকৃতিক জোয়ার-ভাটা বন্ধ করে বদ্ধ জলাধার তৈরি করা ভয়াবহ পরিবেশবিধ্বংসী কাজ।”
তিনি জানান, খালটি উন্মুক্ত না করলে লবণ উৎপাদন ও পরিবহনব্যয় আরও বাড়বে, এবং ভবিষ্যতে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে।
গ্রামীণ পরিবেশ উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি এ.কে.এম আবু ইউসুফ খালটি দ্রুত উন্মুক্ত করে জনস্বার্থে খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।