
ইমরান সোহেল, চট্টগ্রাম : বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষা এলাকা- বাঁশখালীর ছনুয়া। সেখানেই দুই হাজার বর্গফুট জমিতে ২০১০ সালে সচেতন জনগণের প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেন একটি পাবলিক লাইব্রেরি। বইপ্রেমীদের টাকায় শ্রমে উপকূলীয় এলাকার ‘বাতিঘর’ এ লাইব্রেরির বই সংখ্যা ৮ হাজারের বেশি। প্রতিদিন চট্টগ্রাম বাঁশখালী ও কক্সবাজারের পেকুয়া, কুতুবদিয়ার নারী পুরুষসহ আশপাশের এলাকা থেকে এসব বই পড়তে আসেন নানা বয়সী শতাধিক পাঠক।
তবে ১৩ বছর ধরে তিলে তিলে গড়ে তোলা ছনুয়ার “উপকূলীয় পাবলিক লাইব্রেরিটি ঘূর্ণিঝড় (২৪ অক্টোবর) মঙ্গলবার রাতে ‘হামুনের’ আঘাতে চোখের পলকে তছনছ হয়ে গেছে। বৃষ্টির পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে ৬ হাজারের অধিক বই।
ধমকা বাতাসে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে লাইব্রেরির ছাদ, পাঠাগারের হলরুম, পাঠকরুম, স্টাডি রুম। তাছাড়া আসবাবপত্র চেয়ার, টেবিল, পড়ার টুল, বই রাখার থাক, দরজা-জানালা ভেঙে জল, কাদামাটিতে একাকার। প্রায় ১০ লাখ টাকার অধিক এ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যা অপূরণীয় । দুর্লভ এই বই জোগাড় করা অসাধ্য। যা আগামী প্রজন্মের গবেষণার, শিল্প, সাহিত্য, ঐতিহ্যের কাজে আসত। সম্ভবত সারাদেশে হামুনের প্রভাবে একমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত পাবলিক লাইব্রেরী।
কর্ণধার সাইফী আনোয়ারুল আজীম বলেন, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে প্রবল ধমকা বাতাসে প্রথমে লাইব্রেরির দুতলা ছাদ উপড়ে ফেলে। এরপর বৃষ্টির পানিতে ভিজে যায় অন্তত ছয় হাজার বই। ঘুর্নিঝড়ের কারণে হলরুম, পাঠকরুম, স্টাডি রুম ও আসবাবপত্র লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, সাগরপাড়ের সমৃদ্ধ গণপাঠাগার ছিল এটিই একমাত্র ও অন্যতম। মঙ্গলবারও পাঠকরা এ লাইব্রেরিতে স্বাচ্ছন্দ্যে বই পড়েছেন তবে বুধবার সেটি খোলা আকাশের নিচে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আমাদের ৩ হাজারেরও বেশি পাঠক ও নিয়মিত সদস্য। আমি ৯১ এর ঘুর্নিঝড়ে নিকটজনকে হারিয়েছি, হামুন এর আক্রমণে সর্বশেষ নিকটজনও আমি হরালাম। এর থেকে পুনরুত্থানের পথ দেখিনা, পূর্বের চাইতে সহযোগীরা শতভাগ বেশি হাত বাড়ালে সংশ্লিষ্ট মহল হয়ত আলোর নিশানা খুঁজে পাবে।
চট্টগ্রামস্থ আনোয়ারা উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম বলেন, দেশিবিদেশী সাহায্য সংস্থা এনজিও, সরকারি, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান যথাসময়ে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিলে উপকূলীয় পাবলিক লাইব্রেরী দ্রুততম সময়ে ক্ষত শুকিয়ে স্থাপনা ও বই সংগ্রহ করে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন