
দেশচিন্তা ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের তিনজন দগ্ধ হন। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দীপায়ন সরকার ও তার মেয়ে দিয়া রানী সরকার (৫) মারা গেছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এখনো চিকিৎসাধীন দীপায়নের স্ত্রী পপি সরকার। শনিবার গভীর রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন তাদের মৃত্যু হয়। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার (২০ নভেম্বর) রাতে ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুর সরদার বাড়ি এলাকায় আনোয়ার হোসেনের ভাড়া বাসায়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দগ্ধ পপি সরকারের বরাত দিয়ে দীপায়নের বড় বোনের জামাতা সুসেন সরকার বলেন, ‘শুক্রবার মধ্য রাতে গ্যাস লাইটার দিয়ে মশার কয়েল ধরাতে গেলে রুমের মধ্যে আগুন লেগে যায়। এ সময় তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে আগুন নিভিয়ে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে।
ডাক্তারের বরাত দিয়ে সুসেন জানান, দীপায়নের শরীরের ৪৮ শতাংশ, দিয়ার ৪০ শতাংশ ও পপির ৩০ শতাংশ পুড়ে গেছে। মূলত তাদের মুখম-ল ও শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। যার জন্য শনিবার রাত ৮টায় দীপায়ন ও রাত সাড়ে ১০টায় দিয়া মারা যায়। পপি এখনো আশঙ্কাজনক বলেছেন ডাক্তার।
সুসেন আরও বলেন, গ্রামে খুব কষ্টে জীবনযাপন করছিল। যার জন্য আমি তাদের বলি শহরে আসলে স্বামী-স্ত্রী দুইজনের কাজের ব্যবস্থা করে দিব। মেয়েটাকে এখানে ভালো স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিব। এজন্য এখানে বাসাও ঠিক করে দেই। যার জন্য ১০ দিন আগে গ্রাম থেকে পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জে আসে। কয়েক জায়গায় কাজের জন্য কথাও চলছিল। এর মধ্যে কীভাবে কি হয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারছি না। এ বলেই তিনি কান্না শুরু করেন।
কান্না থামিয়ে সুসেন বলেন, এক তলা ভবনের সারি সারি রুমের মধ্যে এক রুমের একটি বাসা নিয়েছি। পাশেই রান্না ঘর ছিল। হয়তো রান্না শেষে গ্যাস ভালোভাবে বন্ধ করেনি। যার জন্য গ্যাস লিকেজ হয়ে ঘরের ভেতর গ্যাস জমে ছিল। যখনই গ্যাস লাইটটার দিয়ে কয়েল ধরাতে গেছে, তখনই আগুন জ্বলে উঠছে।
ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, শনিবার রাতে বাবা ও মেয়ে চিকিৎসাধীন মারা গেছে। স্ত্রীর অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। তাদের লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে।