আজ : শনিবার ║ ১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : শনিবার ║ ১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ১২ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

অনির্দিষ্টকাল ধর্মঘটের ডাক দিলেন নৌযান শ্রমিকরা

দেশচিন্তা ডেস্ক:

বেতন-ভাতার সুযোগ-সুবিধাসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট ডেকেছে নৌযান শ্রমিকরা। আজ মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে শ্রমিকদের এই ধর্মঘট শুরু হচ্ছে। বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের আওতাধীন আটটি সংগঠন এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা নৌশ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি মো. নবী আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ১৩ অক্টোবর রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম অধিদপ্তরের সামনে নৌশ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ ঐক্য পরিষদের মানববন্ধন থেকে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়।

মো. নবী আলম বলেন, ‘আমরা যে দাবিতে ধর্মঘট ডেকেছি সেগুলো পূর্বনির্ধারিত। করোনার কারণে এতদিন চুপ ছিলাম। শ্রমিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখন তো সবকিছু স্বাভাবিক। তাই আমরা আমাদের দাবিতে ধর্মঘট শুরু করতে যাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত নভেম্বরেও আমরা আন্দোলন শুরু করার পর সরকার ও মালিকদের পক্ষ থেকে আমাদের বলা হলো- দাবি মানা হবে। কিন্তু তারা ওয়াদা ভঙ্গ করেছে, তাই ধর্মঘটে বাধ্য হয়েছি। এবার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট প্রত্যাহার করব না।’

যেসব নৌযান বিকেলে বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা দিয়েছে, সেগুলো গন্তব্যে পৌঁছানোর পর নোঙর করা থাকবে বলেও জানান চট্টগ্রাম জেলা নৌশ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি।

এর আগে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। শ্রমিক ফেডারেশনের ১১ দফা দাবি হলো-

১. বাল্কহেডসহ সব নৌযান ও নৌপথে চাঁদাবাজি-ডাকাতি বন্ধ করা
২. ২০১৬ সালে ঘোষিত গেজেট অনুযায়ী নৌযানের সর্বস্তরের শ্রমিকদের বেতন প্রদান
৩. ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস এবং মালিক কর্তৃক খাদ্যভাতা প্রদান
৪. সব নৌযান শ্রমিকের সমুদ্র ও রাত্রিকালীন ভাতা নির্ধারণ
৫. এনডোর্স, ইনচার্জ, টেকনিক্যাল ভাতা পুনর্নির্ধারণ
৬. কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ
৭. প্রত্যেক নৌশ্রমিককে মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান
৮. নদীর নাব্য রক্ষা ও প্রয়োজনীয় মার্কা, বয়া ও বাতি স্থাপন
৯. মাস্টার/ড্রাইভার পরীক্ষা, সনদ বিতরণ ও নবায়ন, বেআইনি নৌচলাচল বন্ধ করা
১০. নৌপরিবহন অধিদফতরে সব ধরনের অনিয়ম ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধ এবং
১১. নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নের জন্য ২০১৫ সাল থেকে আন্দোলন করে আসছেন তারা। এগুলোর কয়েকটি দাবি পূরণ হলেও অমীমাংসিত ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ২০১৮ সালে শ্রম অধিদপ্তরে আবেদন করেন ফেডারেশন নেতারা। যার অনুলিপি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, নৌযান মালিকদের বিভিন্ন সংগঠনসহ সংশ্নিষ্ট সব দপ্তরে দেওয়া হয়।

এরপর একই বিষয়ে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও শ্রম ও কর্মসংস্থান অধিদফতর থেকে সমস্যা সমাধানে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন নেতাদের। আন্দোলনকারীরা জানান, ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ১১ দফা উপস্থাপন করা হলেও তাদের মূল দাবি ২০১৬ সালে প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী সর্বস্তরের শ্রমিকদের বেতন দিতে হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ