
দেশচিন্তা ডেস্ক: পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ঢাকার উন্নয়ন ধারণায় এখনই মৌলিক পরিবর্তন আনা জরুরি। অতিরিক্ত কংক্রিটনির্ভর উন্নয়ন ঢাকাকে অনিরাপদ ও দুর্ব্যবস্থাপনায় ঠেলে দিয়েছে।
রোববার (২৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে ট্রানজিট-অরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (টিওডি) সংক্রান্ত এক প্রকল্পের চতুর্থ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) কারিগরি সহায়তায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এটি বাস্তবায়ন করছে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘বছরের পর বছর আমরা সমস্যা নিয়ে কথা বলি, কিন্তু সমাধানে যেতে সাহসী সিদ্ধান্ত নিই না। আমাদের চিন্তায় পরিবর্তন আনতেই হবে। কারণ পুরোনো কাঠামো এখন আর কাজ করছে না।’
তিনি বলেন, কার্যকর সমন্বয়, ক্ষমতায়ন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন।
ঢাকার নাজুক গণপরিবহনব্যবস্থা নিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, প্রতিদিন কালো ধোঁয়া নির্গতকারী বাস রাস্তায় চলছে। যানবাহন ও পরিবহন পরিচালনাব্যবস্থার সংস্কার ছাড়া ঢাকাকে বাসযোগ্য করা সম্ভব নয়। স্মার্ট গণপরিবহনব্যবস্থা এখন আর বিলাসিতা নয়, অপরিহার্য।
উপদেষ্টা জানান, টিওডি স্মার্ট পরিবহন কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে, তবে পরিবেশগত অখণ্ডতা যেন ক্ষুণ্ন না হয়। একটি সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে আরেকটি সমস্যা তৈরি করা যাবে না। মেট্রো স্টেশন বা বাণিজ্যিক স্থাপনার জন্য উন্মুক্ত স্থান ও পরিবেশগত বাফার নষ্ট করা ঠিক হবে না। ঢাকার মানুষ নিঃশ্বাস নেওয়ার মতো খোলা জায়গা চায়।
পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদাম স্থানান্তরে ধীরগতির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলোর কারণে প্রয়োজনীয় সংস্কার এগোয় না। তিনি শহরে সবুজায়ন উদ্যোগে কমিউনিটির অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্ব দেন। টিওডি উদ্যোগের মাধ্যমে নগরে আরও উন্মুক্ত স্থান, পার্ক ও সবুজ পরিবেশ সৃষ্টির সম্ভাবনায় আশাবাদ ব্যক্ত করলেও তিনি অপ্রয়োজনীয় বাজার নির্মাণে সতর্কতা বজায় রাখার পরামর্শ দেন। বলেন, ঢাকায় বাজারের অভাব নেই। অভাব নিরাপদ, উন্মুক্ত ও সহজলভ্য জনসাধারণের জায়গার।
রাজউক চেয়ারম্যান মো. রিয়াজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ ও জাইকা বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তমহিদে।













