
দেশচিন্তা ডেস্ক: মাদকবিরোধী তীব্র সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১৫।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সকাল ১১টায় কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানা সংলগ্ন এলাকায় সর্বস্তরের জনসাধারণের অংশগ্রহণে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে র্যাব-১৫।
সভায় উপস্থিত ছিলেন র্যাব-১৫ এর অধিনায়কসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক, স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, তরুণ শিক্ষার্থী এবং সাধারণ জনগণ। সভার মূল লক্ষ্য ছিল মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা এবং সমাজে মাদকবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলা।
সভায় বক্তারা বলেন, মাদক আজ বাংলাদেশের সামাজিক কাঠামো ও তরুণ প্রজন্মের জন্য এক গভীর হুমকি। এটি কেবল একজন ব্যক্তির জীবনকেই ধ্বংস করে না, বরং একটি পরিবারের সুখ-শান্তি ও সমাজের স্থিতিশীলতাকেও বিপর্যস্ত করে তোলে। বক্তারা আরও বলেন, মাদকাসক্তি থেকে সৃষ্ট অপরাধ, পারিবারিক সহিংসতা ও সামাজিক অবক্ষয় রোধে এখনই সমাজের প্রতিটি স্তরে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
র্যাব-১৫ এর কর্মকর্তারা জানান, তারা নিয়মিতভাবে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছেন এবং সম্প্রতি বেশ কিছু মাদক চক্রকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তবে শুধুমাত্র আইনগত পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়—মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। এজন্য তারা অভিভাবক, শিক্ষক ও তরুণ প্রজন্মকে মাদকবিরোধী সচেতনতা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
সভায় বক্তারা আরও বলেন, মাদকবিরোধী প্রচারণা শুধু সরকারি উদ্যোগে সীমাবদ্ধ থাকলে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া সম্ভব নয়। পরিবার থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত—সব জায়গায় মাদকবিরোধী আলোচনা ও সচেতনতা তৈরি করতে হবে। তরুণদের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ও সমাজসেবামূলক কাজে সম্পৃক্ত করা গেলে তারা সহজেই মাদক থেকে দূরে থাকবে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলেন, র্যাবের এই উদ্যোগ সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তারা প্রতিশ্রুতি দেন, নিজেদের এলাকায় মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারীদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
সভা শেষে র্যাব-১৫ এর পক্ষ থেকে উপস্থিত জনগণের মাঝে মাদকবিরোধী লিফলেট, পোস্টার এবং সচেতনতামূলক উপকরণ বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি “মাদকমুক্ত সমাজ গড়ি, সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করি” এই স্লোগানে সবাইকে শপথ করানো হয়।
র্যাব এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, মাদকবিরোধী এ ধরনের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম ভবিষ্যতেও জেলার বিভিন্ন স্থানে অব্যাহত থাকবে। তারা বিশ্বাস করেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও জনগণ একসঙ্গে কাজ করলে অচিরেই কক্সবাজারসহ সারা দেশকে মাদকমুক্ত সমাজে রূপান্তর করা সম্ভব হবে।