
দেশচিন্তা ডেস্ক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনীসহ সব বাহিনী মোতায়েন থাকবে। জনগণই নির্বাচনের মূল শক্তি, জনগণ যখন নির্বাচনের মুখী হয়ে যাবে, তখন সেটি কেউ আটকাতে পারবে না।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বিভাগের সকল জেলা প্রশাসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
শান্তিপূর্ণ দুর্গাপূজার আশা জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এবারের দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর হবে বলে আমরা আশা করছি। কোনো জায়গায় বড় ধরনের কোনো সমস্যা নেই। দুর্গাপূজা একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান, এজন্য এর পবিত্রতা রক্ষা করা জরুরি।
এই উদযাপনে ভেতরে দুই ভাগ বা তিন ভাগ বলে কেউ কেউ উল্লেখ করেন, কিন্তু আমার মনে হয় এ ধরনের ভাগ কোনো বাধা হবে না। এটি পূণ্য কাজ, এজন্য কোনো বাধা সৃষ্টি হবে না বলেই আমরা আশা করি। আমি অন্যান্য ধর্মের মানুষদেরও অনুরোধ করছি, তারা যেন সহযোগিতা করেন যাতে পূজার আয়োজন শান্তিপূর্ণভাবে হয় এবং ধর্মীয় পবিত্রতা রক্ষা পায়।
নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, সে বিষয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের সাজেশনও এসেছে। এসব বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে আলোচনা করব। এরপর একটি সমাধান আসবে বলে আশা করছি। নির্বাচনের জন্য আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতিও ভালো। প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে গেছে, সদস্যসংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। এখন মাঠে প্রায় ৩০ হাজার সেনা আছে, নির্বাচনের সময় আরও বাড়ানো হবে। নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার—সবাই মাঠে থাকবে। সর্বোপরি প্রশাসন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে না, এটি নির্ভর করে জনগণের ওপর। জনগণ হচ্ছে আসল শক্তি। জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হবে, তখন সেটি কেউ আটকাতে পারবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি মতৈক্য হয়, তবে সেটি ইতিবাচক হবে। গণমাধ্যমও বড় ভূমিকা রাখবে।
গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আপনারা যদি সত্য ঘটনা প্রচার করেন, তবে গুজব ছড়ানোর সুযোগ কমে যাবে। অতীতে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অনেক উল্টোপাল্টা খবর আসতো, কিন্তু আপনারা কাউন্টার দেওয়ায় তা অনেক কমেছে। তবুও তারা আবার চেষ্টা করতে পারে। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো এবারও আপনারা সত্য তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দেবেন। আমি ডিসি ও এসপি সবাইকে বলেছি, সত্য তথ্য যেন গণমাধ্যমে যায়। সত্য ঘটনা প্রকাশ না হলে গুজব তৈরি হতে পারে।
অস্ত্র উদ্ধার ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে বলেন, অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের অনেক সফলতা আছে। অনেক কষ্ট করে উদ্ধার করা হয়েছে, তবে কিছু অস্ত্র এখনও বাইরে আছে। চট্টগ্রামের ভৌগোলিক অবস্থার কারণে, বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকায়, অভিযান কিছুটা কঠিন। ফটিকছড়ি, রাউজানের মতো অর্ধেক পাহাড়ি, অর্ধেক সমতল এলাকায় সমস্যা থাকলেও উদ্ধার অভিযান চলছে। নির্বাচনের আগেও অভিযান চলবে।
সারা দেশে ছাত্রলীগের মিছিল নিয়ে তিনি বলেন, আজ ঢাকায় হয়েছে। ঢাকার কমিশনার ফোন করেছিলেন, আমি বলেছি এগুলো আইডির আওতায় আনতে। তারপরও তারা জামিন পেয়ে যায়। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে তারা সহজে জামিন না পায়। নির্বাচনের সময় মিছিলের সংখ্যা বাড়বে, সবাই মাঠে নামবে। তবে ছোটখাটো এসব (ছাত্রলীগের) মিছিল মিছিল আর হবে না।