আজ : বুধবার ║ ৩রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : বুধবার ║ ৩রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║১৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ১১ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

‘শিক্ষার্থীদের কল্যাণে চবির একাডেমিক কার্যক্রম পুরোদমে সচল রাখতে হবে’

দেশচিন্তা ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম পুরোদমে সচল রাখতে করণীয় বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০:৩০টায় চবি উপাচার্য দপ্তরের সিনেট কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় বক্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আন্তরিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন। এসময় বক্তারা চলমান পরিস্থিতি এবং সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ ও মতামত তুলে ধরেন। প্রশাসনের যারা সরাসরি ঘটনাস্থলে ছিলেন, মেডিকেলে গিয়েছেন, ক্যাম্পাসে ও হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন, তারা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। একই সাথে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর রবিবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরোদমে ক্লাস ও পরীক্ষা চালু করতে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।

এতে সভাপতিত্ব করেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন।

চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যেকোনো ঘটনা ঘটলে আমি সরাসরি স্পটে চলে যাই। অপ্রীতিকর কিছু ঘটলে আমরা কোনো ধরনের অবহেলা করি না। তিনি শিক্ষার্থী-স্থানীয়দের সাথে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা নিবৃত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা ছিল বলে জানান। তিনি উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা বিভাগ চালান, শিক্ষার্থীদের কাছাকাছি থাকেন, আপনারা শিক্ষার্থীদের সুন্দর করে বোঝানোর চেষ্টা করুন।

উপাচার্য বলেন, আমাদের প্রিয় শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দূর করতে ১০ তলা বিশিষ্ট ১০টি আবাসিক হল নির্মাণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। চবি মেডিকেল নতুন করে সাজানো হচ্ছে। আমাদের সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যেসব সম্মানিত শিক্ষক ও কর্মকর্তা ঘটনার বিষয়ে শোনার সাথে সাথে সেখানে ছুটে গেছেন, সময় দিয়েছেন, উপাচার্য তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

উপাচার্য শিক্ষার্থীদের ভুল তথ্যে প্রভাবিত না হয়ে নিজের বিবেককে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান। এ সময় তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪৪ ধারা ছিল না। ১৪৪ ধারা ছিল ক্যাম্পাস সংলগ্ন গ্রামে। এজন্য ক্যাম্পাসে সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। অথচ মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪৪ ধারা চলছে।

উপাচার্য বলেন, ক্যাম্পাসে প্রতিদিন বিভিন্ন গবেষণা নিয়ে সভা-সেমিনার চলছিল। খুব ভালো একাডেমিক পরিবেশ বিরাজ করছিল। আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম পূর্ণ গতিতে ফিরিয়ে আনতে হবে। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন উপাচার্য। তিনি বলেন, আমাদের আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রয়েছে এবং আমরা নিয়মিত তাদের খোঁজখবর নিচ্ছি। উপাচার্য সিন্ডিকেটের সকল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এ সময় অসুস্থ শিক্ষার্থীদের জন্য দোয়া কামনা করেন চবি উপাচার্য।

মাননীয় উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা খুবই প্রয়োজন। তিনি আজ চবির বেশ কয়েকটি বিভাগে পরীক্ষা ও ক্লাস অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানান। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের সভাপতি ও পরিচালকবৃন্দ একাডেমিক কমিটির বৈঠক করে বিভাগের ক্লাস পরীক্ষা পুরোদমে চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করার অনুরোধ করেন তিনি। এক্ষেত্রে উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) সংশ্লিষ্ট অনুষদসমূহের ডিনের নির্দেশনা মেনে পরিকল্পনা গ্রহণের অনুরোধ জানান।

মাননীয় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, সবাই মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন সকল ধরনের শিক্ষার্থীবান্ধব কার্যক্রম পরিচালনা করবে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সকলের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানান। উপ-উপাচার্য আগামী রবিবার থেকে পুরোদমে একাডেমিক কার্যক্রম চালু করতে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।

চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে বিভিন্ন সুপারিশমালা উপস্থাপন করে বক্তব্য রাখেন চবি কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. ইকবাল শাহীন খান, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আল-আমীন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী, মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. শাহাদাত হোসেন, চবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর মমতাজ উদ্দিন আহমদ, কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. আমির মুহাম্মদ নসরুল্লাহ, শাহজালাল হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. ফুয়াদ হাসান, সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মান্নান, শামসুন নাহার হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. বেগম ইসমত আরা হক, প্রীতিলতা হলের প্রভোস্ট ও চবি সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হাসমত আলী, মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. সৈয়দ মুহাম্মদ শামসুল হুদা, শহীদ ফরহাদ হোসেন হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মো. আবদুল মান্নান, বিজয়-২৪ হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. জান্নাত আরা পারভীন, নবাব ফয়জুন্নেছা হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. এস.এম. রফিকুল ইসলাম, অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর এ.জি.এম. নিয়াজ উদ্দিন, ফাইন্যান্স বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নেছারুল করিম, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফজলুল কাদের, ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক ড. মো. আনোয়ার হোসেন, সহকারী প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. কোরবান আলী, চাকসু পরিচালক প্রফেসর মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান চৌধুরী, নিরাপত্তা দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আমান উল্লাহ, আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন, মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ড. হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী, তথ্য ও ফটোগ্রাফি শাখার প্রশাসক ড. মো. শহীদুল হক, প্রীতিলতা হলের আবাসিক শিক্ষক ফারহানা আজিজ ও শামসুন্নাহার হলের আবাসিক শিক্ষক ফাহমিদা ইয়াসমিন।

সভায় চবি ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ সানাউল্লাহ চৌধুরী, বিভিন্ন বিভাগীয় সভাপতি ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক, হলের প্রভোস্ট, বিভিন্ন দপ্তরের প্রশাসক, বিভিন্ন পর্ষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ও অফিস প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ