
দেশচিন্তা ডেস্ক:
বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ একশ’ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের পুষ্টিতথ্য নিয়ে প্রকাশিত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও কর্মশালা
বঙ্গোপসাগরের বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ একশ’ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের পুষ্টিতথ্য নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে একটি ‘কম্প্রিহেনসিভ রেফারেন্স বই’। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) ফিশারিজ অনুষদের ফিশিং ও পোস্ট-হারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগের উদ্যোগে এটি প্রকাশিত হয়।
‘Structural Characteristics, Nutritional Profiling and Proximate Classification of 100 Commercially Significant Marine Species of the Bay of Bengal for an Exclusive Reference Book’ শীর্ষক গবেষণা প্রকল্পের ফলাফলের ভিত্তিতে ‘দ্য নিউট্রিশনাল স্টোরি অব দ্য বে অব বেঙ্গল’স ১০০ স্পেসিস: এ কম্প্রিহেনসিভ রেফারেন্স বুক (THE NUTRITIONAL STORY OF THE BAY OF BENGAL’S 100 SPECIES: A COMPREHENSIVE REFERENCE BOOK)’ শীর্ষক এই বই রচিত হয়।
মৎস্য অধিদপ্তরের টেকসই উপকূলীয় এবং সামুদ্রিক মৎস্য প্রকল্পের (Sustainable Coastal Marine Fisheries Project-SCMFP), অধীনে সিভাসু’র ফিশিং ও পোস্ট-হারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। প্রকল্পের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর ছিলেন প্রফেসর ড. মো. ফয়সাল এবং কো-প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর ছিলেন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নূরুল আবছার খান।
এই উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সকাল ১০টায় সিভাসু অডিটোরিয়ামে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান। এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামাল, ফিশারিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শেখ আহমাদ আল নাহিদ, পরিচালক (গবেষণা ও সম্প্রসারণ) প্রফেসর ড.আবদুল আহাদ এবং মৎস্য অধিদপ্তর চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক মো: আনোয়ার হোসেন । সভাপতিত্ব করেন গবেষণা প্রকল্পের কো-প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নূরুল আবছার খান।
কর্মশালায় পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে গবেষণা প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রকল্পের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর প্রফেসর ড. মো. ফয়সাল। তিনি বলেন, গবেষণালব্ধ বাস্তবজ্ঞানের আলোকে বইটি রচনা করা হয়েছে। এটি সামুদ্রিক প্রজাতির (মাছ, ক্রাস্টেসিয়ান এবং মোলাস্ক) কাঁচা, সিদ্ধ এবং ভাজা আকারে তাদের গঠন (আর্দ্রতা, প্রোটিন, চর্বি এবং কার্বোহাইড্রেট)-এর একটি বিস্তৃত বিশ্লেষণ প্রদান করে, যা তুলে ধরে রান্নার বিভিন্ন পদ্ধতি কিভাবে পুষ্টির পরিমাণকে প্রভাবিত করে। তিনি আরও বলেন, ‘এই মৌলিক গবেষণাধর্মী বইটি গবেষক, প্রক্রিয়াকরণকারী এবং মৎস্য-সম্পর্কিত কর্মীদের জন্য মূল্য সংযোজন পণ্য প্রণয়নের ক্ষেত্রে একটি নতুন ক্ষেত্র উন্মোচন করবে। এটি মৎস্যপণ্য শিল্প প্রতিষ্ঠাকে ত্বরান্বিত করবে, যা শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন আয়ের উৎস এবং রাজস্ব উৎপাদনের পথ তৈরি করবে ।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন,‘বঙ্গোপসাগরের অফুরন্ত সম্পদকে আমরা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারছিনা। অথচ উন্নত দেশসমূহ এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বহুদূর এগিয়ে গেছে। আমাদেরও সমুদ্রসম্পদকে কাজে লাগানোর কৌশল রপ্ত করতে হবে এবং গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে।’ সিভাসু’র উক্ত গবেষকদলকে এই সৃজনশীল প্রকাশনার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে উপাচার্য বলেন, এই ধরনের প্রকাশনার মাধ্যমে গবেষক ও শিক্ষকরা যুগ যুগ ধরে স্মরণীয় হয়ে থাকে।
কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের প্রতিনিধি, ভ্যালু চেইন সাপ্লাইয়ার্স এবং এমএস শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।