
দেশচিন্তা ডেস্ক: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, জুলাই সনদ একটি অসম্পূর্ণ দলিল। এর কিছু অংশ বিপজ্জনক। জুলাই সনদে ৪৭ অনুপস্থিত। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান নাই। দেশের গণমানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন জুলাই সনদে হয় নাই। শুধুমাত্র একটি দল ছাড়া কেউ জুলাই সনদকে স্বাগত জানায় নাই।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকাল ৩টায় ঐতিহাসিক ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান স্মরণে বাংলাদেশ লয়ার্স কাউন্সিল চট্টগ্রামের উদ্যোগে আইনজীবী অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ আরও বলেন, রাষ্ট্রের সংস্কার নয়, শুধু নির্বাচনসংক্রান্ত যেসব সুপারিশ অতি জরুরি, অন্তত নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান জড়িত, সেগুলোর সংস্কার করে নির্বাচন দিতে হবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার ও গণহত্যার বিচার ছাড়া জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের পক্ষে নয়।
তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি ছাড়া জনগণ কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না। নির্বাচনের আগে প্রশাসনিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে এবং আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। আসন্ন নির্বাচন শুধু একটি নির্বাচন নয়; এটি একটি বিপ্লব-পরবর্তী জন–আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনের সুযোগ। ফ্যাসিস্টদের বিচার এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের মধ্য দিয়েই একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, বার কাউন্সিলের রেকর্ড অনুসারে সারাদেশে আইনজীবীর সংখ্যা প্রায় দেড়লাখ। মামলা রয়েছে প্রায় ৪৬ লাখ। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে মামলা বেড়েছে। ইচ্ছে করে তাদের আইনজীবী মামলা গুলো ঝুলিয়ে রেখেছিল বিরোধী দলগুলোকে দমানোর জন্য।
তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণা এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে। দীর্ঘ ১৭ বছরের আন্দোলনের ফসল এই জুলাই সনদ। আগামীর বাংলাদেশ হবে মানবিক, ন্যায় ইনসাফের বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, শর্টকাট আয়ের দিকে না গিয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করতে হবে আইনজীবীদের। যে যেই দলই করেন না কেন আমরা সিনিয়রদের সম্মান করে থাকি৷ তারাও সহযোগিতা করে থাকেন। আইনজীবীর মূখ্য দায়িত্ব বেঞ্চের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখা। অনৈতিকতার আশ্রয় নিলে ভবিষ্যতে সেসব আইনজীবীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। তরুণ আইনজীবীদের সততার দৃষ্টান্ত রাখা উচিত। আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে আইনজীবীদের ভূমিকা পালন করতে হবে।
বাংলাদেশ লয়ার্স কাউন্সিল চট্টগ্রামের সভাপতি এডভোকেট আবদুল মালিকের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি এডভোকেট শামসুল আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন,সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী ও ডা. এ কে ফজলুল হক, ডা. আবু নাছের, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন রনি, ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মুহাম্মদ আলী প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন এডভোকেট কফিল উদ্দিন, সিনিয়র এডভোকেট সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, এডভোকেট আরিফুর রহমান, এডভোকেট আবদুল মোতালিব, এডভোকেট শাহাদাত হোসেন, এডভোকেট মিনহাজ উদ্দিন, প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক এড,আবুল মোজাফফর, এডভোকেট ফজলুল বারী প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট আব্দুস সাত্তার, সেক্রেটারি এডভোকেট হাসান আলী, চট্টগ্রাম জেলা দুদকের পিপি এডভোকেট কবির আহমদ প্রমুখ।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের স্মরণে দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন এড. জসিম উদ্দিন সরকার।