
নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশচিন্তা আয়োজনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভা নগরীর মোমিন রোডস্থ চট্টগ্রাম একাডেমী মিলনায়তনে আজ ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪ টায় অনুষ্ঠিত হয়।
এতে নাট্যজন ও সাংবাদিক সজল চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক যুগ্ম পরিচালক বীর গেরীলা মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব ফজল আহমেদ, উদ্বোধক ছিলেন সাতকানিয়া পৌর মেয়র ও চট্টগ্রাম দক্ষিনজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ জোবায়ের।
দেশচিন্তা সম্পাদক ইমরান সোহেলের সঞ্চালনায় সম্মানিত অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) সাংগঠনিক সম্পাদক মিঠুল দাশ গুপ্ত, রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী শিলা চৌধুরী, বিনোদন রঙ সম্পাদক নাছির হোছাইন জীবন প্রমুখ।
বীর গেরীলা মুক্তিযোদ্ধা ফজল আহমদ বলেন, মাতৃভাষা প্রাকৃতিক ভাষা। আর যা কিছু প্রাকৃতিক তাই প্রাণসক্তিতে ও প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর। তাই তো মাতৃভাষা নিশ্চিত চেতনার ভাষা, তা চেতনার বাহন।
মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ বা মায়ের দুধের মতো। মায়ের দুধের যেমন বিকল্প নেই, কোনো দুধই মায়ের দুধের সমকক্ষ নয়। তেমনি মাতৃভাষারও কোনো বিকল্প নেই, কোনো ভাষাই মায়ের ভাষার সমকক্ষ নয়। কেবল মাতৃভাষাই এমন একটি ভাষা যে ভাষা কাউকে বিশেষভাবে শিক্ষা দিতে হয় না এবং যে ভাষা একটা জাতির সবার জন্যই সমভাবে বোধগম্য।
উদ্বোধক মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, মানব শিশু প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকেই মাতৃভাষা শিখে এবং তার অধিকারী বা হকদার হয়ে যায়। প্রকৃতি থেকে পাওয়া বলেই মাতৃভাষা প্রাকৃতিক ভাষা। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই বান্দার অন্তরে মাতৃভাষার প্রতি সৃষ্টি করেছেন অকৃত্রিম আকর্ষণ, অনুরাগ ও ভালোবাসা। বান্দার মাতৃভাষা খোদার মনের অনুরাগে রাঙানো ভাষা।
নাট্যজন ও সাংবাদিক সজল চৌধুরী বলেন, মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধের সমান। সেই মাতৃভাষার আন্তর্জাতিক মঞ্চে স্বীকৃতি কিন্তু খুব পুরনো দিনের কথা নয়। ঐতিহাসিক ২১ ফেব্রুয়ারি, সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে। এই দিনের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের পাশের দেশ বাংলাদেশের স্বপ্ন, তার জন্ম এবং অবশ্যই ঐতিহ্যের। কিন্তু সেই ইতিহাসে রয়েছে আত্মত্যাগ, নিরলস সংগ্রাম এবং হার না মানা মনোভাব।
কে ছিলেন সেদিনের সেই রফিক, সালাম, বরকত ও আব্দুল জব্বাররা ভারতীয় উপমহাদেশ সদ্য স্বাধীন হয়েছে। ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হওয়া পাকিস্তানের দুটো আলাদা ভূখণ্ড- আর অন্যতম হল পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী পূর্ব পাকিস্তান। তবে পশ্চিম পাকিস্তানে উর্দু প্রধান ভাষা হলেও পূর্ব পাকিস্তানের ক্ষেত্রে হল বাংলা। ক্ষমতাসীন পাকিস্তান সরকার উর্দু ঘেষা, তাই পূর্ব পাকিস্তানের উপর শুরু থেকেই রুষ্ট। বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা দিতে হবে— এই দাবি থেকে পূর্ব পাকিস্তানের মাটিতে শুরু হয় ভাষা আন্দোলন।