
দেশচিন্তা ডেস্ক: পেনশন-ভাতা দেওয়াসহ নয় দফা দাবি জানিয়েছে জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশ।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ দাবিগুলো জানানো হয়।
দাবিগুলো হলো- ইমামদের জন্য বেতন স্কেল নিশ্চিত করা, প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনি সুরক্ষা প্রদান করা, সমাজে অবস্থান দৃঢ়করণ, বহুমুখী দক্ষতা উন্নয়ন, কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ ও নিবন্ধন, গণমাধ্যম ও জনমত গঠন, মিম্বরের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, মসজিদ কমিটিতে পদ দেওয়া এবং পেনশন ও ভাতা দেওয়া।
সভায় জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশের সভাপতি আব্দুল হাফিজ বলেন, যে ইমাম সমাজ একটি জাতির আত্মিক ও নৈতিক মেরুদণ্ড, আজ সেই মেরুদণ্ডকেই সবচেয়ে বেশি অবজ্ঞা ও অবহেলার শিকার হতে হচ্ছে। আজকের বাস্তবতা বড়ই নির্মম। একজন উচ্চশিক্ষিত ইমাম, যিনি কুরআন-সুন্নাহর অগাধ পাণ্ডিত্য রাখেন, তাকে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে যে সম্মান দেওয়া উচিত ছিল, তা আজ বিলুপ্তপ্রায়।
তিনি বলেন, মসজিদের পরিচালনা কমিটি অনেক ক্ষেত্রে ইমামদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। তুচ্ছ অজুহাতে মিম্বরের কণ্ঠস্বরকে রুদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়। চাকরির কোনো নিরাপত্তা নেই, নেই কোনো আইনি সুরক্ষা। আজ নিয়োগ আছে তো কাল নেই-এই অনিশ্চয়তা নিয়ে একজন ইমাম কীভাবে নিশ্চিন্ত মনে দ্বীনের খেদমত করবেন?
তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে বড়ো বঞ্চনা হলো অর্থনৈতিক। বর্তমানের আকাশচুম্বী দ্রব্যমূল্যের বাজারে একজন ইমামকে যে সামান্য সম্মানী দেওয়া হয়, তা কেবল অপমানজনকই নয়, বরং অমানবিক। যে হাত সমাজকে আলোর পথ দেখায়, সেই হাতকে আজ অভাবের তাড়নায় সংকুচিত হয়ে থাকতে হয়।
রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ইমামদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই মন্তব্য করে আব্দুল হাফিজ বলেন, সমাজ সংস্কারের যেকোনো বড় সিদ্ধান্তে আমাদের মতামতকে উপেক্ষা করা হয়। আমাদের কেবল দোয়া-মোনাজাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এই অবজ্ঞা কেবল একজন ব্যক্তির প্রতি নয়, বরং এটি দ্বীনি নেতৃত্বের প্রতি এক চরম উদাসীন্য।
সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ইমামদের জন্য জাতীয় বেতন স্কেল নির্ধারণ করতে হবে, ইমাম সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে এবং প্রতিটি মসজিদে ইমামদের নিয়োগপত্র ও চাকরির নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। এটি আমাদের করুণা নয়, এটি আমাদের সাংবিধানিক অধিকার।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির মহাসচিব বেলায়েত হোসাইন আল-ফিরুজী, কেন্দ্রীয় সদস্য জিয়াউল হক মজুমদার প্রমুখ।











