
দেশচিন্তা ডেস্ক: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাজা কার্যকরের দুটি উপায়ের কথা জানালেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) মানবতাবিরোধী অবরাধের মামলায় হাসিনাসহ তিন আসামির রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তিনি। এসময় পলাতক দুই আসামিকে ফেরানোর বিষয়ে কথা বলেন এই আইনজীবী।
সাংবাদিকদের এক পশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আসামিদের ফিরিয়ে আনতে সরকার দুই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। একটি হচ্ছে, ভারতের সঙ্গে ২০১৩ সালের যে অপরাধী বহিঃসমর্পন চুক্তি রয়েছে, সেই চুক্তি অনুযায়ী তাদেরকে ভারত সরকারের কাছে ফেরত চাইবে বাংলাদেশ।’
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘ভারত সরকার যদি আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়, তবে তারা আসামিদেরকে ফেরত দেবে। তাদেরকে ফিরিয়ে এনে ফাঁসি কার্যকর করা যাবে।’
তিনি জানান, আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতার করে এনে আমাদের বিরুদ্ধে হওয়া সাজা কার্যকর করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলার এক আসামি সাবেক আইজিপি গ্রেফতার হয়ে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে রয়েছেন। অন্য দুই আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল ভারতে পালিয়ে রয়েছেন।
মামলার আসামিদের আপিল বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্তরা ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন। তবে তাদের আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পন করে তারপর আপিল করতে হবে। এছাড়া আপিল করার সুযোগ নেই।’
বিচারের স্বচ্ছতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই মামলার আদালতে কার্যক্রম লাইভ দেখানো হয়েছে যেন কোনো প্রশ্ন না থাকে। সারা বিশ্ব সেটি দেখেছে। এজন্য এই বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে অস্বচ্ছতার কোনো প্রশ্ন নেই।’
এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে ছয় অধ্যায়ে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের প্রথম অংশ পড়া শুরু করেন বিচারিক প্যানেলের সদস্য বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলের অপর সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ।
রায়ে ট্রাইব্যুনালের আনা পাঁচটি অভিযোগের দ্বিতীয়টিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। প্রথমটিতে দেওয়া হয়েছে আমৃত্যু কারাদণ্ড। আরেক আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে সবকটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে মামলায় রাজসাক্ষী হওয়ায় আরেক আসামি পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।











