
দেশচিন্তা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের তথা বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড ক্যারিবীয় সাগরে পৌঁছেছে। ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে উত্তেজনা বাড়ার মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের কথিত মাদক চোরাচালান ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান জোরদারের অংশ হিসেবে রণতরীটি সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, রোববার ক্যারিবীয় সাগরে এই রণতরী মোতায়েনের ঘোষণা দেয় মার্কিন সামরিক বাহিনীর দক্ষিণ কমান্ড (সাউথকম)। তারা জানায়, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের নির্দেশে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগকে সমর্থন করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আর এর লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত অপরাধী নেটওয়ার্কগুলোকে ধ্বংস করা।
ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ডটিতে ৪ হাজারের বেশি নাবিক ও ডজনখানেক যুদ্ধবিমান বহন রয়েছে। এই রণতরীটি এখন ক্যারিবীয় অঞ্চলে থাকা আইওও জিমা অ্যামফিবিয়াস রেডি গ্রুপ ও এক মেরিন এক্সপেডিশনারি ইউনিটসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে।
এসব ইউনিট নতুন গঠিত জয়েন্ট টাস্ক ফোর্স সাউদার্ন স্পিয়ার-এর অধীনে পরিচালিত হয়, অপরাধী নেটওয়ার্কগুলোকে ধ্বংস করাই যার লক্ষ্য বলে কমান্ড জানিয়েছে।
অন্যদিকে জেরাল্ড আর ফোর্ডের সঙ্গে রয়েছে এর সম্পূর্ণ স্ট্রাইক গ্রুপ— ক্যারিয়ার এয়ার উইং এইটের নয়টি স্কোয়াড্রন, আর্লি বার্ক গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস বেইনব্রিজ ও ইউএসএস মেহান এবং আকাশ প্রতিরক্ষা গাইডেড জাহাজ ইউএসএস উইনস্টন এস চার্চিল।
এদিকে রোববার সাউথকম জানায়, পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্র আরও একটি নৌযানে হামলা চালিয়েছে এবং সেখানে সন্দেহভাজন তিনজন মাদক পাচারকারী নিহত হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, হেগসেথের নির্দেশে সাউদার্ন স্পিয়ার টাস্ক ফোর্স “নির্ধারিত একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের” নিয়ন্ত্রণে থাকা নৌযানে প্রাণঘাতী এই হামলা চালায়।
মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বলা হয়, নৌযানটি অবৈধ মাদক পরিবহনে জড়িত ছিল এবং এটি একটি মাদক চোরাচালান রুট দিয়েই চলছিল।
এদিকে ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্র বিমানবাহী রণতরী মোতায়েন করায় এটিকে ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনারই প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে। মূলত ভেনেজুয়েলার একটি স্পিডবোটে হামলার মধ্য দিয়ে ক্যারিবীয় অঞ্চলে কথিত মাদকবিরোধী মার্কিন সামরিক অভিযান শুরু হয় গত সেপ্টেম্বর মাসে। আর অক্টোবরের শেষ দিকে তা আরও প্রসারিত হয়ে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরেও ছড়িয়ে পড়ে।
এ অভিযানের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মাদক চোরাচালান সংশ্লিষ্ট অন্তত ২১টি হামলা চালানো হয়েছে এবং এসব হামলায় ৮২ জন নিহত হয়েছে।
















