আজ : মঙ্গলবার ║ ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ : মঙ্গলবার ║ ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ║২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ║ ২২শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক গতিশীলতা এবং জনগণের কল্যাণকর ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের ভূমিকা জোরদার করতে হবে: মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য চট্টগ্রাম মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমীর পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, বিশ্বের ইতিহাসে অনন্য নজির হলো চব্বিশের জুলাই বিপ্লব। জেনারেশন জেড তথা তরুণদের ডাকে রাজপথে নেমে এসেছিল সেদিন শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী, ডাক্তার, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, সংবাদকর্মীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। অভিভাবক, রিক্সাওয়ালা, হকারসহ সবাই নেমে এসেছিল সেদিন ১৮ কোটি মানুষকে মুক্ত করতে। কিন্তু বিপ্লবের চৌদ্দ মাসেরও বেশি সময় চলে গেলেও এখনো সচল হয়ে উঠেনি অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাতসমূহ। স্বৈরাচারের দোসর ও তাদের পদায়নের লোকগুলো বহাল তবিয়তে ঘাঁপটি মেরে বসে থাকায় সংস্কার, বিচার ও নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে প্রত্যয় তা এখনো দৃশ্যমান নয়। তাই ৫ দফা গণদাবীর পক্ষে ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদেরকেও সোচ্চার হতে হবে এবং অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সত্যিকার দেশপ্রেমিক নেতৃত্বের সরকার প্রতিষ্ঠা করে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক গতিশীলতা এবং জনগণের কল্যাণকর ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কার্যালয়স্থ (বিআইএ) মিলনায়তনে চট্টগ্রাম মহানগরীর জামায়াতের উদ্যােগে আয়োজিত বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, একদিকে বাংলাদেশ আজ বৈদেশিক ঋণে জর্জরিত অন্যদিকে বেকারত্বের কারণে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট এর ফসল উঠানো সম্ভব হচ্ছে না। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার সময় বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ২১ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার। মেগা প্রজেক্টে মেগা দুর্নীতি ও টাকা পাচারের কারণে ক্ষমতা ছাড়ার সময় সেই ঋণ বেড়ে হয়েছিল ১০৩ বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক ঋণের বোঝা লাঘব ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যবসায়ী-শিল্পিপতিদের সৃজনশীল উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আদানী গ্রুপকে মিরসরাইয়ে ৯০০ একর জমি দেয়া দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ। অবিলম্বে তাদের চুক্তি বাতিল করতে হবে। দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি রোধ এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে বাংলাদেশ আইবিডাব্লিউএফ কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি চট্টগ্রাম ৯ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডা. এ কে এম ফজলুল হক বলেন, দেশের সংকটময় মুহূর্তে গণদাবি আদায়ের পেছনে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা জাতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আপনারা এগিয়ে আসলে ৫ দফা বাস্তবায়ন শুধু সম্ভব নয়, তা টেকসইও হবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে জনগণের পক্ষে দাঁড়ানো এখন সময়ের দাবি। ৫ দফা শুধু রাজনৈতিক দাবি নয়, এটি দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের রূপরেখা।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য চট্টগ্রাম মহানগরীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুসের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম ২ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, নগর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম ১০ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, ব্যবসায়ী নেতা মহিউদ্দীন শাহজাহান, হারুনুর রশিদ, মুহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী, জামাল উদ্দীন, শেখ কামরুল ইসলাম, লায়ন নুরুল আবছার, কামরুল হুদা, মুহাম্মদ রফিক, আরিফ হোসেন বাবলু, সাইয়েদ আল মামুন, আরিফ হোসেন বাবলু, আব্দুল আজিজ প্রমুখ।
সভায় অংশগ্রহণকারী একাধিক ব্যবসায়ী প্রতিনিধি বলেন, তারা দেশের স্থিতিশীলতা এবং দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে এই ৫ দফাকে যৌক্তিক ও সময়োপযোগী মনে করছেন। তারা এর বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন, শিল্পপতি ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on print
Print

আজকের সর্বশেষ সংবাদ