-আবু জাঈদ
রাত তিন’টে, সাবেক রেসকোর্সে হঠাৎ রমনী,
জিজ্ঞেস করলাম, কে তুমি ?
বললো, আমি রাধা বেশ্যা,
আমি তথাকথিত আঁতেলদের মত,
বলে বসলাম, বেশ্যা বলছো কেন ? পতিতা বলো।
সে’ত আর আঁতেল নয়,
রোজ হাজার ওয়াটের কষ্ট সহ্য করে টাকা কামায়,
হেসে বললো, আমি’ত পতিত নই,
রোজ যদি পাঁচ জন খরিদ্দার পাই, তো মাসে দের’শ জন আসে,
বোতাম খোলা ব্লাউজের ফাঁকে উঁকি মারার জন্যে,
পতিত হলে তারা আসতো ?
আমি পতিত নই সাহেব, আমি বেশ্যা।
আমি অবাক ,কথা ঠিক বলেছে রাঁধা বেশ্যা,
জানতে চাইলাম, কষ্ট হয় না ?
রাধা বেশ্যার মুখে আবার হাসি,
আমাকে ও আমাদের সভ্যতাকে কাপিয়ে দিয়ে উত্তর,
সাহেব, আমার এ কষ্ট যে আমার সন্তানের ক্ষুধার চেয়ে বড় নয়,
দেশে বুড়ো বাপ, অন্ধ মা, তারা দিন গোনে,
এইটুক কষ্ট না করলে কি চলে ?
ও সাহেব, আমার বুকটা কিন্তু রঙিন,
একটু হাত রাখবা নাকি ? মাত্র বিশ টাকা।
কিছু না বুঝে আমার আবার ভুল করা,
বিশ টাকা তার হাতে গুঁজে হাটা শুরু করলাম,
হঠাৎ পিঠে কি যেন লাগলো, বোধ হয় ওই বিশ টাকার নোটটি,
পেছন ফেরার সাহস হয়নি তখন,
কিন্তু কান দুটো সজাগ ছিল, শুনলাম ,
শুনলাম, রাধা বেশ্যা বলে চলছে-
তোদের মতো কুকুরদের ভিক্ষা আমার না হলেও চলে,
নে তোর বিশ টাকা, আমি গতর বেচে খাই,
তোদের মত নতুন কৌশলে ভিক্ষা করে খাই না,
নিজেকে নিংড়ে দিয়ে টাকা কামাই,
বিশ টাকা দিয়ে সাধু সাজিস কেন ?
পারলে এমন কিছু কর যাতে,
খুন হয়ে যাওয়া ছেলের জন্যে কেঁদে আমার মায়ের মতো কেউ অন্ধ না হয়।
পারলে এমন কিছু কর যাতে,
আমার সন্তান্দের মুখে আমি খাবার দিতে পারি।
পারলে এমন কিছু কর, যাতে রাধা কে আর বেশ্যা হতে না হয়।