মামুনুর রশীদ মামুন, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : হাটবার আসলেই বাজারে যেতে হবে, শোরগোল উঠে যায় পাড়ায় ও মহল্লায়। সপ্তাহের প্রতি রবি ও বুধবার ব্রহ্মপুত্রের বুক চিরে বালুচরে বসে শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী জোড়গাছ হাট।
ব্রহ্মপুত্রের ঘোলা জলে ডিঙ্গি নৌকা সারি সারি, হাজার লোকের কোলাহলে বিভিন্ন চরাঞ্চল ও দূরদূরান্ত থেকে হাটুরে গন্তব্য জোড়গাছ হাটকে ঘিরে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ব্রহ্মপুত্রের বুক চিরে বসা সেই হাট জোড়গাছ হাট।
চিলমারী উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের রমনা ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত জোড়গাছ এলাকায় বসে এই হাটটি। আজকের এই হাটটি জানামতে আনুমানিক ১০২ বছর আগে চিলমারী চর কড়াই বরিশাল এলাকায় এই হাটের যাত্রা শুরু হয়। এই হাটের বিশেষত্ব তখনকার ভারতীয় ব্যবসায়িরা পণ্য বেচাকেনা করতে আসতেন এই হাটে। এই হাটটির স্থান পরিবর্তন করা হয় চিলমারী ইউনিয়নের শাখা হাতির বৌইল মন্দিয়ার খাতায়, ১৯২০ সালে যখন ব্রহ্মপুত্রের নদী ভাঙ্গন শুরু হয়। স্বাধীনতার পর চিলমারী উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের জোড়গাছ এলাকায় হাটটি স্থানান্তরিত হয়।
তাইতো কৃষকের সোনার ফসল ধান, গম, ভুট্টা, বিভিন্ন জাতের ডাল, সরিষা, বাদাম, চিনা, কাউন, গরু, ছাগল হাঁস, মুরগি সহ প্রয়োজনীয় যাবতীয় সকল পণ্য বেচাকেনা হয়।
বর্তমানে তিন ভাগে বসছে হাটটি। নদীর গা ঘেঁষে বালুর চরে সারি সারি নৌকাও জিনিসপত্র বেচাকেনা হয় এতে করে চরাঞ্চলের মানুষের কষ্ট কিছুটা লাঘব হয়। অন্যদিকে গরু-ছাগলের জন্য নির্ধারণ করা এক বিস্তীর্ণ ফাঁকা মাঠে গরু ছাগল ও মহিষ বিক্রি করা হয়। আর একটু এগিয়ে আসলে সামনেই চোখে পড়ে নতুন বাজার নামে আর এক হাট যেখানে হাস মুরগি বাঁশ ও বেতের তৈরি যাবতীয় জিনিসপত্র বেচাকেনা হয়। এ হাটটিতে চিলমারীর নয়াহাট, অষ্টমীর চর ছাড়াও বাহিরের জেলা থেকে ক্রেতা বিক্রেতা আসেন জিনিসপত্র খরিদ করতে। ঐতিহ্যবাহী জোড়গাছ হাটের বিশেষত্ব, চরাঞ্চলের খাঁটি গাভীর দুধের তৈরি রসগোল্লা, কাঁচা দই ও সন্দেশ ইত্যাদি।
রবি ও বুধবার আসলেই জোরগাছ সাজে নতুন রূপে। হাটের সাধারণ ক্রেতা বিক্রেতা ও দূর দূরান্ত থেকে আসা মানুষের সঠিক নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থা ও নজরদারি রাখে স্থানীয় প্রশাসন এবং বিশেষ করে হাটে অবস্থানরত লোকদের সুবিধা অসুবিধার ব্যাপারে সক্রিয় প্রশাসন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.