দেশচিন্তা ডেস্ক : চট্টগ্রাম মহানগরীর গরীবুল্লাহ শাহ হাউজিং হোসাইটি সমিতি নামের একটি সমিতির প্রধান উপদেষ্টা দিদারুল আলম চৌধুরী ও একই সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মো: কাঊছার গং দেরকে ভূমিদস্যু উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে জমি দখল, চাদাবাজি ও নির্যাতনের অভিযোগ আনে ভুক্তভোগী পরিবার। তাছাড়া গুন্ডাবাহিনীর দিয়ে নারী সদস্যদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা।
সোমবার (১০ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে ওই সমিতির নামীয় গ্যাংদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নির্যাতিতা ভুক্তভোগী ছয় বোনের বড় বোন মিনুয়ারা বেগম। এ সময় উপস্থিত পাঁচ বোন ও একমাত্র ভাই জাহিদ হাসানসহ সবাইকে অসহায়ের মত কাঁদতে দেখা যায়।
ভুক্তভোগী মিনুয়ারা বেগম বলেন, তথাকথিত নামসর্বস্ব অবৈধ “গরীবুল্লাহ শাহ হাউজিং সোসাইটি” নামক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা ভূমিদস্যু দিদারুল আলম চৌধুরী ও একই সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক মো: কাঊছার গং রা অবৈধ সমিতির নামে চাদাবাজি, দখলবাজি, মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর।
গতকাল (৯ জুলাই) বিকাল ৪ টার পরে অভিযুক্তরা তাদের জায়গাটি পরিষ্কারের নামে দখলের চেষ্টা চালায়। এ সময় তাদের বাঁধা দিলে তারা তাদের পরিবারের নারী সদস্যদের শ্লীলতাহানি ও শারীরিক নির্যাতন করেছে পুলিশের সামনেই। ঘটনার সময় জাতীয় সেবা ৯৯৯ ফোন করলে পুলিশ আসলেও নির্বিকার ছিলেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পরে উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আরেকটি ফোর্স পাঠালে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালায়। এতে মিনুয়ারা বেগম তার অপর বোন মুনমুন ফাতেমা ও তাদের মা ফাতেমা বেগম গুরুতর আহত হন। পরে তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তারা মূলত জায়গা জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে ভূমিদস্যুতায় লিপ্ত বলে যোগ করেন ভুক্তভোগীরা। অসহায় পরিবার পেয়ে তারা হামলা পরে নির্যাতন চালাচ্ছে পরিবারটির ওপর।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা জানায়, পৈতৃক বসত ভিটায় শান্তিপূর্ণ বসবাসের অধিকার সাধারণ নাগরিকের,কিন্তু সে অধিকার থেকে আমাদের বঞ্চিত করতে উঠে পড়ে লেগেছে দিদারুল আলম ভূমিদস্যু গং রা।
ভুক্তভোগীরা জানান, পরিবার ছয় বোন ও একমাত্র ভাই মোঃ জাহেদ হাসান সহ উপরোক্ত ঠিকানায় পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত ২০.০০ শতক সম্পত্তিতে দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে তারা। ৪টি দলিল মূলে খরিদা সূত্রে তাদের পিতার রেজিষ্ট্রার্ড নামজারী খতিয়ান আছে পরবর্তীতে পিতার মৃত্যুর পর ওয়ারিশান সূত্রে ভাই ও বোনেরা বা ওয়ারিশগণ তপশীলোক্ত সম্পত্তির মালিক সত্ববান হয়ে সরকারী খাজনাদি পরিশোধ করে ভোগ দখলে স্থিত থাকলেও অভিযুক্তরা নানা উপায়ে তাদেরকে বসতভিটা সহ জায়গা দখলের পায়তারা করে আসছে। এক ভাই ছাড়া পরিবারের সকলে নারী সদস্য হওয়ার সুযোগ নিয়ে তাদের নানাভাবে হয়রানি করছে এই অভিযুক্ত দিদার ও তার বাহিনী সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, গত ১৬ জুন তারা জোরপূর্বক তাদের বসতভিটায় সাইনবোর্ড লাগানোর চেষ্টা করে এবং পরিবারের সদস্যদের গাল-মন্দ করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ইতিমধ্যে এ নিয়ে খুলশী থানায় একটি সাধারণ ডায়রিও করা হয়েছে।, যাহার নং-২১৪৪। জিডি করায় ১০ দিনের মাথায় উলটো তাদের জায়গাতে নিজেরাই চুরি করেছে উল্লেখ করে থানা পুলিশকে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাদের এক মাত্র ভাই সহ বোনেদের নামে মামলা করে ওই ভূমিদস্যুরা, গত ৮ জুলাই সকাল ৮ টার দিকে ৪০-৫০ জন স্বশস্ত্র লোকজন নিয়া আসে তারা এবং পরিষ্কার করার নামে অবস্থান নেয়। অবৈধভাবে দখলের চেষ্টায় লিপ্ত হয়ে তারা বিভিন্ন ফলজ গাছ কেটে ফেলে এবং দেয়াল ভাঙ্গে ফেলে। পরে রাত ১টায় অবৈধভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয় এবং জোরপূর্বক নির্মাণ কাজ চালাতে থাকে তারা। যার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে । এখনও তারা পুলিশ চলে গেলে পুনরায় দখলের উদ্দেশ্যে স্বশস্ত্র মহড়া ও অবস্থান করছে যাতে করে পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশ কমিশনার, আইজিপি, জেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং এইসব দখল বাজদের হাত থেকে রেহাই পেতে সহযোগিতা কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী নিলু পারভিন, মুনমুন ফাতেমা, ফেরদৌস মুক্তা, দিলওয়ারা বেগম ও তাদের একমাত্র ভাই জাহিদ হাসান।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.