দেশচিন্তা ডেস্ক:
রাজধানীর মতিঝিলে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা না পেয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ফুটপাতে চাঁদাবাজের সঙ্গে জড়িত ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক হকার। গতকাল রবিবার ঢাকা মহানগর হাকিম (১৮ নম্বর) আদালতে চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এ মামলা করেন ফুটপাতে ব্যবসা করা হেমায়েত নামে ওই হকার। আসামিরা হলেন- সাইফুল ইসলাম মোল্লা, শিবলু, হোসাইন, আবদুল হান্নান ও আবদুল গফুর। আদালত শুনানি শেষে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাইয়ুম মোল্লা।
ভুক্তভোগী হকার হেমায়েত আমাদের সময়কে জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থান মতিঝিলের এজিবি কলোনি আইডিয়াল জোন ১ নম্বর কাঁচাবাজার সংলগ্ন রাস্তার পাশে ফুটপাতে দীর্ঘদিন ধরে বোরকার ব্যবসা করছেন তিনি। ব্যবসার সামান্য আয় দিয়েই চলে তার সংসার। মামলার আসামিরা চিহ্নিত ফুটপাত চাঁদাবাজ। তাদের বিরুদ্ধে মতিঝিল ও পল্টন থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক
মামলা রয়েছে। এক শ্রেণির অসাধু পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতার যোগসাজসে চক্রটি শত শত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর (হকার) কাছ থেকে দৈনিক জনপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা চাঁদা আদায় করে আসছে। এছাড়াও সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতেও চাঁদা দিতে হয় তাদের। ফুটপাতের এই চাঁদাবাজ চক্রের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হকাররা।
হেমায়েত আরও জানান, গত সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ফুটপাতে দোকান সাজাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় হেমায়েতের কাছে দৈনিক হিসেবের চাঁদার টাকা চায় অভিযুক্তরা। বেচাকেনা নেই জানিয়ে টাকা দিতে অপারগতা জানালে ক্ষেপে গিয়ে আসামিরা তার কাছ থেকে মালামাল কেনার জন্য রাখা ১৭ হাজার টাকা এবং দোকান থেকে ৩৫ পিস বোরকা ছিনিয়ে নেয়। এতেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা হেমায়েতের কাছে ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম চাঁদা দাবি করে। না দিলে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেয়। প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তরা শত শত মানুষের সামনে রাস্তায় ফেলে হেমায়েতকে বেধড়ক পেটায়। তাদের এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথিতে জখম হওয়া ছাড়াও হেমায়েতের দুচোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রক্তাক্ত হেমায়েতকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। পরে মতিঝিল থানায় মামলা করতে গেলে আসামিরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। এরপর রবিবার মামলা করেন হেমায়েত। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান ক্ষুদ্র এই ব্যবসায়ী।অভিযোগের বিষয়ে জানতে গতকাল মামলায় প্রধান অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম মোল্লার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি।