দেশচিন্তা নিউজ ডেস্ক:
সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেনীতে পাহাড় ও সমতলে অনগ্রসর জাতিসত্তাদের জন্য সংরক্ষিত ৫% কোটা বাতিলের প্রতিবাদে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগর শাখা।
মিছিলটি নগরীর শহীদ মিনার প্রাঙ্গন থেকে শুরু হয়ে নন্দন কানন হয়ে প্রেসক্লাব ঘুরে চেরাগী পাহাড় মোড়ে এসে এক বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়।
ছাত্রনেতা অমিত চাকমার সঞ্চালনায় পিসিপি মহানগর শাখার সভাপতি হ্লাচিংমং মারমার সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তথ্য প্রচার সম্পাদক ত্রিরতœ চাকমা, কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক অংকন চাকমা এবং হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মন্টি চাকমা। এছাড়া সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল চবি শাখার সহ-সভাপতি উসাগ্য মারমা, ত্রিপুরা স্টুডেস্ট ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগর শাখার তথ্য প্রচার সম্পাদক টমেস রোয়াজা ও প্রমাছাস এর সংগঠক উজ্জ্বল মারমা।
বক্তারা বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্যকে পাশ কাটিয়ে সরকারি চাকরির ১ম ও ২য় শ্রেণীতে সকল প্রকার কোটা ব্যবস্থা তুলে দিয়েছে। এতে সবচে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পাহাড় ও সমতলে বসবাসকারী অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠী এবং সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রতিবন্ধী সমাজ।
অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীর কোটা বাতিলের যুক্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে এখন দেশে আর কেউ অনগ্রসর নেই। সবাই অগ্রসর হয়েছে। কোন প্রকার জরিপ ছাড়া এবং পাহাড়ি নেতৃবৃন্দের সাথে কোন ধরণের আলোচনা না করে সরকার কোনভাবে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে না বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।
বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে বসবাসরত পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীকে আরো প্রান্তিক করার জন্য এই অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে অনগ্রসর জাতিসত্তাদের জন্য ন্যায্য বিশেষ কোটা ব্যবস্থা না রাখা মানে শাসকগোষ্ঠী তাদের গোলাম, দাস বানিয়ে রাখতে চাওয়ার মনোবৃত্তি প্রকাশ পেয়েছে। মাতৃভাষা বাংলা না হওয়া সত্ত্বেও ভিন্ন জাতিসত্তার শিক্ষার্থীরা বাংলায় পড়াশোনা করতে বাধ্য হয়। ফলে তাদের কাছে পাঠ্যক্রম দুর্বোধ্য হয়ে উঠে। এতে প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ে যায়। বিবিসি বাংলার এক জরিপে দেখা গেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রাইমারী লেভেল থেকে ঝড়ে পড়ার হার বেশী। সুতরাং এইসব জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা রাখা জরুরী।
অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রাপ্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা কেড়ে নেয়ার মাধ্যমে আরো একবার প্রমানিত হয়েছে কোন সরকারই অনগ্রসর জাতিসত্তাদের বন্ধু নয়। অবিলম্বে বক্তারা পাহাড় ও সমতলে পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর জাতিসত্তাদের জন্য সংরক্ষিত ৫% কোটা পুনর্বহাল করার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবী জানান।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.