বাংলায় বিদ্যুৎ বিলের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি
বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিপণন কাজে নিয়োজিত নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করে গ্রাহকদের বিলের কাগজ দিচ্ছে। তবে সাধারণ গ্রাহকদের অভিযোগ অনেকেই ওই ভাষা বোঝেন না, এতে বাড়ছে বিড়ম্বনা। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মুজিববর্ষ ও ভাষার মাসে বাংলায় বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন নীলফামারীর ডোমার উপজেলার বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতির সভাপতি গোলাম কুদ্দুস আইয়ুব।
২৪ ফেব্রয়ারি সোমবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ দাবিতে ব্যানার টানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তিনি। এরপর জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দেন। স্মারকলিপিটি জেলা প্রশাসকের পক্ষে গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খন্দকার নাহিদ হাসান।
গোলাম কুদ্দুস আইয়ুব বলেন, ‘ভাষার আগ্রাসনের মধ্য দিয়ে ৮০ ভাগ সাধারণ (অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত) মানুষের ওপর ইংরেজি ভাষা চাপিয়ে দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ বিলের ওই ভাষা বুঝতে না পেরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ গ্রাহকরা।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ সভায় বাংলায় ভাষণ দেন। তিনি বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা করার জোর দাবি জানিয়েছেন। আর সেখানে দেশের সাধারণ মানুষর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে ইংরেজি ভাষার বিদ্যুৎ বিল। মুজিববর্ষ ও ভাষার মাসে ইংরেজির পরিবর্তে বাংলায় বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
২০১৪ সালের ১৫ মে পর্যন্ত দাফতরিক কাজে বাংলা ভাষা ব্যবহারের সময় বেঁধে দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। আর বিদ্যুৎ বিভাগ গ্রাহকদের সুবিধার্থে বিলের কাগজ বাংলায় দেওয়ার আদেশ জারি করেছিল ২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট। তবে এখন পর্যন্ত সেটি বাস্তবায়ন করা হয়নি, বলে অভিযোগ করেন গোলাম কুদ্দুস।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসা নীলফামারী সদরের বাহালী পাড়া গ্রামের কৃষক আশরাফ আলী গোলাম কুদ্দুসের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘বেশিরভাগ বিদ্যুৎ গ্রাহক লেখাপড়া কম জানেন। ইংরেজি ভাষার বিল বুঝতে না পেরে আমরা সাধারণ গ্রাহকরা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছি। বিলটি বাংলায় হলে সমস্যা থাকতো না।’
একই উপজেলার কচুকাটা ইউনিয়নের দোনদরী গ্রামের কৃষক রোস্তম আলী (৪২), বাবুল হোসেন (৩৮), সফিয়ার রহমানসহ (৫৫) অনেকেই বাংলায় বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার দাবি জানান।
বাংলায় বিল দেওয়ার দাবিটি যৌক্তিক উল্লেখ করে নীলফামারী জেলা শহরের নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নওশাদ আলম বলেন, ‘বিলটি ইংরেজির পরিবর্তে বাংলা ভাষায় হলে গ্রাহকদের বুঝতে সুবিধা হবে। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খন্দকার নাহিদ হাসান স্মারকলিপি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘এটি একটি যৌক্তিক এবং সময় উপযোগী দাবি। দাবিটি বাস্তবায়নে নেসকোর কাছে স্মারকলিপিটি পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.