মাত্র ৬৯ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে দিনের শুরুটা দুর্দান্ত করেছিল জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল। তাদের প্রথমদিনে করা ২৯১ রানের সংগ্রহটাকে তখন মনে হচ্ছিলো পাহাড়সম কোনো স্কোর। কিন্তু দিনের খেলা যতোই সামনে গড়াল, ততই পেছালো সফরকারীরা। ম্যাচের দখল নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) একাদশ।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে জিম্বাবুয়ের বোলারদের চরম পরীক্ষা নিচ্ছেন বিসিবি একাদশের অধিনায়ক আল আমিন জুনিয়র এবং অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতা ব্যাটসম্যান তানজিদ হাসান তামিম। দুজন মিলে এরই মধ্যে গড়ে ফেলেছেন ২০৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। যেখানে বড় অবদান যুবা দলের ওপেনার তামিমেরই।
আল আমিন-তামিমের জুটিতে ভর করে শুরুর ধাক্কা সামলে নিয়েছে বিসিবি একাদশ। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৫৮ ওভার শেষে বিসিবি একাদশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৭৫ রান। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তামিম, একই মাইলফলকের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছেন আল আমিন।
আক্রমণাত্মক ঢঙে ব্যাটিং শুরু করা তামিম হাফসেঞ্চুরিতে পৌঁছেছিলেন মাত্র ৪০ বলে, ২ চার ও ৫টি বিশাল ছক্কার মারে। ফিফটির পরেও ধরে রাখেন সাবলীল ব্যাটিং। সেঞ্চুরি করতে খেলেন মাত্র ৮৬ বল, ১০ বাউন্ডারি ও ৫ ছক্কার মারে পৌঁছে যান ব্যক্তিগত শতকে।
অথচ তামিমকে নামানো হয়েছিল সাত নম্বরে। কিন্তু তার সহজাত ব্যাটিং পজিশন ওপেনিং। নিজের চেনা ব্যাটিং পজিশনে না নেমেও স্বাভাবিক ব্যাটিংয়ের খানিক কৃতিত্ব আলআমিন জুনিয়রকেও দিতে পারেন তামিম। একপ্রান্ত আগলে রাখা ব্যাটিংয়ে এখনও পর্যন্ত ১৪০ বল থেকে ৯৫ রান করেছেন এ মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচটিতে নেয়া হয়েছে যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের ৬ ক্রিকেটারকে। এদের মধ্যে রান পাননি অধিনায়ক আকবর আলী, বিশ্বকাপে সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদুল হাসান জয় এবং মিডল অর্ডারে আস্থার প্রতীক শাহাদাত হোসেন দীপু। তবে দারুণ শুরু করেছিলেন একই দলের ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন।
যার ফলে মাত্র ৬৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল বিসিবি একাদশ। নিজের চেনা ওপেনিং পজিশন ছেড়ে সাত নম্বরে নামলেও শুরু থেকেই মারমুখী ছিলেন তামিম। মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগে ৭ বলে একটি করে চার-ছয়ের মারে ১১ রান করেন তিনি।
বিরতি থেকে ফিরে হাঁকান আরও ৪টি ছক্কা, সঙ্গে ১টি চারের মারে মাত্র ৪০ বলে তুলে নেন ব্যক্তিগত ফিফটি। এর আগে যুবা দলের তিন ব্যাটসম্যান আকবর, জয় ও শাহাদাত মিলে সাকুল্যে করেছেন ৪ রান। মাহমুদুল জয় ১, শাহাদাত ২ ও আকবর আউট হয়েছেন ১ রান করে। তাদের তিনজনকেই নামানো হয়েছিল বিশ্বকাপে করা নিজেদের পজিশনেই।
তবে এক ইনিংসে রান পাননি বলেই যে বাতিলের খাতায় ফেলে দিতে হবে যুবা ক্রিকেটারদের- এমনটা কিন্তু নয়। মূলত এখন থেকেই শুরু হয়ে গেলো আকবর, জয়দের পরবর্তী ধাপে ওঠার প্রক্রিয়া। এতদিন ধরে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে যেভাবে পেয়েছেন সাফল্য, তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি পরিশ্রম করেই ধরতে হবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সাফল্যের সোপান।
ইনিংস সূচনা করতে মোহাম্মদ নাইম শেখের সঙ্গে পাঠানো হয়েছিল পারভেজ ইমনকে। বেশিদূর যেতে পারেননি নাইম। ইনিংসের প্রথম বলে ৪ মেরে শুরু করলেও তিনি আউট হয়ে গেছেন সপ্তম ওভারেই। চার্ল মুম্বার বলে আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে ১১ রান করেছেন বাঁহাতি নাইম।
অগ্রজ সঙ্গী আউট হয়ে গেলেও নির্ভিক চিত্তে খেলতে থাকেন ইমন। কিন্তু অপরপ্রান্তে দেখতে থাকেন যুব দলে তার সতীর্থদের আসা যাওয়া। তিন নম্বরে আসেন মাহমুদুল জয়, ফিরে যান ৫ বলে ১ রান। পরে চার নম্বরে নামেন শাহাদাত। তিনি বেশ কিছুক্ষণ উইকেটে থাকলেও ২২ বলে ২ রানের বেশি করতে পারেননি।
মাত্র ৩৯ রানে তিন ব্যাটসম্যান ফিরে চতুর্থ উইকেটে বিসিবি একাদশের অধিনায়ক আলআমিন জুনিয়রের সঙ্গে ২৯ রানের ছোট জুটি গড়েন ওপেনার ইমন। তিনি আউট হন ২৪তম ওভারে। অফস্পিনার আইন্সলে দলুভুর বলে ক্যাচ দেন ভিক্টর নিয়ুচির হাতে। খেলেন ৪ চার ও ১ ছয়ের মারে ৩৪ রানের ইনিংস।
এরপর উইকেটে আসেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর। তার স্থায়িত্বকাল হয় মাত্র পাঁচ বল। এর মধ্যে নিজে ৩ বল খেলে ১ রান করতে সক্ষম হন। যুবা অধিনায়কের বিদায়ের পর আসেন সেই দলের ওপেনার তানজিদ তামিম।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.