দেশচিন্তা ডেস্ক: প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগ ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, বুধবার, সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারী লেইনস্থ ভবনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস ২০২৫ উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষে মানবাধিকার দিবস বিষয়ক আলোচনা সভা, প্রদর্শনী বিতর্ক, পোস্টার প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক এস. এম. নছরুল কদির। আইন বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব অনুপ কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এই আয়োজনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইন অনুষদের ডিন তানজিনা আলম চৌধুরী। বক্তা ছিলেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জনাব আহমদ রাজীব চৌধুরী, জনাব সঞ্জয় বিশ্বাস, জনাব হিল্লোল সাহা ও সহকারী অধ্যাপক জনাব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ নোমান। প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক এস. এম. নছরুল কদির তাঁর বক্তব্যে বলেন, মানুষই মানবাধিকারের কথা বলে, আবার মানুষই মানবাধিকার লঙ্ঘন করে। বস্তুত পৃথিবীতে যতদিন মানবাধিকার লঙ্ঘন থাকবে, ততদিন মানবাধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন ও সংগ্রাম থাকবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত অন্যায়-অত্যাচার-অবিচার-খুন-ধর্ষণ-রাহাজানি ঘটে থাকে, ঘটে থাকে এক্সট্রা-জুডিশিয়াল কিলিং। ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলন ছিল এসব থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য, নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টির জন্য। আমরা যদি প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গায় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কাজ করি, তাহলে অবশ্যই আমরা অধিকতর ভালো বাংলাদেশ পাবো। তিনি আরও বলেন, মানবাধিকার হচ্ছে সকল মানুষের মৌলিক অধিকার, যা কোনো অবস্থাতেই অগ্রাহ্য করা উচিত নয়। আমাদের সমাজে মানবাধিকার রক্ষা এবং এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এই ধরনের আয়োজনে অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকের এই দিনটি আমাদের আরও একবার মনে করিয়ে দেয় যে, মানবাধিকারের লঙ্ঘন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তানজিনা আলম চৌধুরী বলেন, মানবাধিকার নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হলে আমাদের প্রথমে এর মৌলিক দিকগুলো জানা প্রয়োজন। আজকের আলোচনা সভা, প্রদর্শনী বিতর্ক মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ভাবতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করবে।
জনাব আহমদ রাজীব চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, রাষ্ট্রব্যবস্থায় মানবাধিকারের চেতনা ছড়িয়ে পড়বে, আমরা সবাই যদি মানবাধিকার বাস্তবায়নে কাজ করি। তিনি আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের আহ্বান করেন, তারা যেন আর্থিকভাবে দুর্বল ব্যক্তিদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা প্রদান করেন।
জনাব সঞ্জয় বিশ্বাস তাঁর বক্তব্যে বলেন, মানবাধিকার সংস্কৃতি বলতে এমন সামাজিক চর্চা, মূল্যবোধ, আচরণ ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সমষ্টিকে বোঝায়, যেখানে প্রতিটি মানুষের মর্যাদা, স্বাধীনতা, নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার, বৈচিত্র্যের প্রতি সম্মান এবং জবাবদিহিতা—স্বাভাবিক ও প্রতিষ্ঠিত এক প্রাত্যহিক অভ্যাসে পরিণত হয়।
জনাব হিল্লোল সাহা তাঁর বক্তব্যে বলেন, শ্রম অধিকার নিশ্চয়তা আসলে মানবাধিকার সুরক্ষারই অংশ। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, ন্যায্য মজুরি ও মর্যাদা নিশ্চিত না হলে মানবাধিকারও পূর্ণতা পায় না। জনাব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ নোমান মানবাধিকার রক্ষায় আইনের ভূমিকা তুলে ধরেন।
সভাপতির বক্তব্যে বিভাগের চেয়ারম্যান জনাব অনুপ কুমার বিশ্বাস বলেন, মানবাধিকার শুধু আলোচনা বা নীতিকথার বিষয় নয়; এটি বাস্তব জীবনে প্রয়োগযোগ্য এক মৌলিক প্রতিশ্রুতি। মানবাধিকার মানে মানুষের মর্যাদা রক্ষা, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং দুর্বল মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
অনুষ্ঠানে আইন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.