
দেশচিন্তা ডেস্ক: রাজনৈতিক সরকার যা পারে আমরা তা করতে পারি না, মানুষ এভাবে শাসিত হতে হতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশ সামরিক যাদুঘরে বাংলাদেশ এনার্জি কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন৷ তিনি বলেন, দেখবেন সবখানে ছয় লেনের হাইওয়ে চাইবে। আপনি হয়তো বলবেন ছয় লেনের হাইওয়ে করতে গেলে এখান থেকে বন কাটা যাবে। অন্যদিকে, ওই এলাকার মানুষ সড়ক অবরোধ করে রাখবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত ছয় লেনের রাস্তার ঘোষণা না দেওয়া হয় ততক্ষণ পর্যন্ত ওরা সড়ক থেকে সরবে না। তখন আমাদের মতো সরকার দাঁড়িয়ে কি করবে? রাজনৈতিক সরকার যা পারে আমরা তা করতে পারি না। এভাবে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। মানুষ এভাবে শাসিত হতে হতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা বলার চেষ্টা করছি ছয়লেনের রাস্তা হলে ওটাই যে শুধু উন্নয়ন তা নয়। আপনাকে বনটাও বাঁচাতে হবে। অবরোধের জন্য প্রথাগত সরকার যে ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমরা কি তা করতে পারবো! আমরা তো সেটি করতে পারছি না। এই বাস্তবতাটা আপনারা একটু দয়া করে মাথায় রাখবেন।
তিনি বলেন, এখন দেখি ১০০ একরের নিচে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় জায়গা নিতে চায় না। সব বিশ্ববিদ্যালয়কেই ১০০ একর করে জায়গা দিতে হবে। না দিলে মন খারাপ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০০১ এর হাইপ তুলে দেওয়া হয়, কিন্তু আমাদের তো একশ একর দেওয়ার মতো উপায় নেই।
তিনি আরও বলেন, এই কথাগুলো এজন্য বললাম যে অনেকগুলো ফোর্সের মধ্যে দিয়ে সরকারকে একটা সিদ্ধান্তে আসতে হয়। সেই ফোর্স গুলোর সঙ্গে কথা বলে আলাপ-আলোচনা করে একটি জায়গায় আসাও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।
এনার্জি কনফারেন্সের বিষয়ে তিনি বলেন, আজকের সম্মেলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি বাংলাদেশের পরিবেশ,জ্বালানি নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা সব ক্ষেত্রে এটি প্রাধিকারের জায়গা।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিটি মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তর জ্বালানি উপদেষ্টার থেকে ডিও লেটার পেয়েছি। আমরা বলেছি প্রত্যেকটা সরকারি অফিসের রুফটপে একটা করে সোলার প্যানেল বসবে। ওটা কার্যকারী সোলার প্যানেল হতে হবে। ওটা শো পিস হিসেবে থাকবে না। প্রত্যেকটা মন্ত্রণালয় এজন্য কাজ করছে। সব মন্ত্রণালয়ের আর্থিক অবস্থা তো একরকম থাকে না। অর্থ বিভাগের সঙ্গে একটা সমঝোতায় আসা হয়েছে যে মন্ত্রণালয়গুলো এটা কার্যকরভাবে করতে পারবে সেই মন্ত্রণালয় গুলোকে অর্থ ছাড় করবে।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা নির্বাচনমুখী হয়েছি। সত্যিকার অর্থে আমরা কমপ্লিট কাজ করার সময় পেয়েছি এক বছর। নীতিতে যতটুকু পরিবর্তন আনা আমাদের কাছে এচিভয়েবল মনে হয়েছে আমরা সেটুকু এনেছি।
বাংলাদেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতকে ঘিরে আলোচনা-পর্যালোচনার তৃতীয় বারের মতো বাংলাদেশ এনার্জি কনফারেন্স ২০২৫ শুরু হয়েছে।
এ বছর বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিডাব্লিউজিইডি) এই কনফারেন্সটির আয়োজন করছে। এছাড়া সহ-আয়োজক হিসেবে থাকছে জলবায়ু ও জ্বালানি–সংশ্লিষ্ট এনজিও, দ্বিপাক্ষিক সহযোগী প্রতিষ্ঠান, নবায়নযোগ্য জ্বালানি-প্রচারক সংগঠন, গণমাধ্যম এবং সিভিল সোসাইটি সংগঠনসমূহ।
এটি এমন একটি কেন্দ্রীয় প্ল্যাটফর্ম, যেখানে দেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে জড়িত বিভিন্ন অংশীজন উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং জ্বালানি সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিষয়ে মতবিনিময়ের সুযোগ পান।
এবারের কনফারেন্সে বিদ্যুৎ, জ্বালানি খাতের ৩০০ এর বেশি অংশীজন অংশগ্রহণ করছেন।















