
দেশচিন্তা ডেস্ক: রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেয়ার কথা ছিল গত শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) ভোরে। কিন্তু কারিগরি ত্রুটি থাকার কারণে কাতার আমিরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় আসতে না পারায় যাত্রা পিছিয়ে যায়।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডন নেয়া হবে কি না, সে বিষয় রাতে সিদ্ধান্ত দেবে মেডিকেল বোর্ড।
এদিকে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) প্রফেসর ডা. এ কিউ এম মহসিনের তত্ত্বাবধানে বিএনপি চেয়ারপারসনের এন্ডোস্কোপি সম্পন্ন হয়। এন্ডোস্কোপি রিপোর্ট অনুযায়ী তার পাকস্থলীর রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. আল মামুন।
এর আগে ঢাকাস্থ কাতারের দূতাবাস জানায়, বেগম জিয়াকে নিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাবে কাতার সরকার। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) পাঠানোর কথা থাকলেও কারিগরি ত্রুটির কারণে সেদিন পৌঁছায়নি। পরে দূতাবাস থেকে জানানো হয়, জার্মানির এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় আসবে। তবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি জার্মানির কোম্পানি হলেও ভাড়া থেকে শুরু করে যাবতীয় সব ব্যবস্থাপনা করছে কাতার সরকার।
সূত্রে জানা গেছে, বেগম জিয়াকে লন্ডনে নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত এলেই কাতার আমিরের পক্ষে পাঠানো হবে জার্মানির এয়ার অ্যাম্বুলেন্স।
সবশেষ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, গত (বৃহস্পতিবার) বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার আবারও অবনতি ঘটে। যে কারণে লন্ডন যাত্রায় তার স্বাস্থ্য উপযুক্ত হলে রওনা দেবেন বেগম খালেদা জিয়া। তবে মেডিকেল বোর্ডের অনুমতি ও সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে তার বিদেশ যাত্রা।
বেগম জিয়াকে নিয়ে যেতে যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় এসেছেন তার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমান। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে বিমানবন্দর থেকে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে এসে শাশুড়ির স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নেন তিনি। বিএনপি নেত্রীর চিকিৎসার পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন ডা. জুবাইদাসহ মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা।
দীর্ঘদিন ধরে তিনি আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত বছরের ৫ আগস্টে গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসার জন্য ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থান শেষে গত ৬ মে দেশে ফেরেন তিনি।
এরপর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয় বিএনপি চেয়ারপারসনকে। সবশেষ গত ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বিএনপি চেয়ারপাসনকে। এরপর থেকে তিনি সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে রয়েছেন বলে জানিয়ে আসছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ হোসেনসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। সবশেষ গত ১৩ দিন ধরে এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন।















