দেশচিন্তা ডেস্ক: বস্ত্রখাত নিয়ে আবেগের বশে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, আবেগময় অনেক সিদ্ধান্তের কারণে পাটশিল্পের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমরা পাটের ক্ষেত্রে যে ভুল করেছি, বস্ত্রখাতে সেই ভুল করবো না। আবেগের বশে কোনো সিদ্ধান্ত নেবো না। আমরা সমৃদ্ধির স্বর্ণশিখরে পৌঁছাতে চাই।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারে (জেডিপিসি) জাতীয় বস্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘বস্ত্র শিল্পের প্রবৃদ্ধি, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি’।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব বিলকিস জাহান রিমির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা বলেন, আবেগময় অনেক সিদ্ধান্তের কারণে এই শিল্পের শুধু ক্ষতি হচ্ছে না, আমরা আবার এই ভুল করতে চাই না।
তিনি বলেন, বস্ত্রখাতের যে সমৃদ্ধি হয়েছে বেশ কিছু মালিক নিজেরাই টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন। বিদেশে গেছেন, বিনিয়োগ করেছেন, জ্ঞান অর্জন করেছেন। এ খাতে ২০ শতাংশ মুনাফা অর্জন করছেন, এটি সবার সামগ্রিক অর্জন।
তিনি আরও বলেন, বস্ত্রখাতে সবাই খরচ বাঁচাতে চায়। এই শিল্পে খরচ বাঁচানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আমরা যদি আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে যদি ভুল করি তাহলে স্লিপ করবো। আমরা ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করতে চাই।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বস্ত্র ও পাটশিল্পের অতীত ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সরকার সামনে এগুতে চায়। পাটশিল্পে অতীতে অদক্ষতা, অযোগ্যতা, দুর্বৃত্তায়ন ও অব্যবস্থাপনার কারণে শিল্পটি ধ্বংসের মুখে পড়েছে। রঙিন স্বপ্ন দেখানো হয়েছে, যার সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। কিছু অর্জন করতে না পেরেই স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল। এর ফলে সরবরাহ–চাহিদার ঘাটতি তৈরি হয়। আর প্লাস্টিক শিল্পের উত্থানে পাটপণ্য প্রাপ্যতা কমে যায়।
উপদেষ্টা জানান, বস্ত্রশিল্পে যেন একই ভুল পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে সরকার সতর্ক রয়েছে। শিল্পোন্নয়ন, সহায়কনীতি, বিনিয়োগ, উদ্যোক্তা নেতৃত্ব ও গ্র্যাজুয়েটদের দক্ষতা—সবার সমন্বয়ে বস্ত্র খাত এগিয়ে যাবে। আমরা রপ্তানি আয়ে ১০০ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য অর্জন করতে চাই। এরমধ্যে বস্ত্র খাতের অবদানই ৮৬ শতাংশ।
তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা নিজেদের সিদ্ধান্তে তেলের দাম বাড়িয়েছেন। সরকার তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। তাদের আলোচনার জন্যে ডাকা হয়েছে।
পরিত্যক্ত জুট মিল শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা জানান, শিল্পগুলো ধীরে ধীরে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। উন্মুক্ত টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে ১৪টি শিল্প বেসরকারি খাতে গেছে। ৩০ বছরের লিজে আরও শিল্প হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
পরিবেশবান্ধব পাটের ব্যাগ নিয়ে তিনি বলেন, সরকার একটি বড় উদ্যোগ নিয়েছে। এক হাজার ৬০০ এর বেশি উদ্যোক্তাকে নিয়ে জলবায়ু ফান্ডের আওতায় একটি রিভলভিং ফান্ড গঠন করা হয়েছে। এখান থেকে পাটপণ্য কিনে পুনরায় বিক্রি করা হচ্ছে, যা বাজারে সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করছে।
তিনি জানান, এবার বাণিজ্য মেলায় ১০ লাখ পাটের ব্যাগ বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশীয় ঐতিহ্যের পাটের ব্যাগকে আবার মূলধারায় ফিরিয়ে আনাই সরকারের লক্ষ্য।
উপদেষ্টা আরও বলেন, পাট ও বস্ত্রশিল্পকে স্থায়ীভাবে শক্তিশালী করতে সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.