দেশচিন্তা ডেস্ক: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) কারাবন্দি নেতা ইমরান খানের সঙ্গে কারাগারে অবিলম্বে সাক্ষাতের দাবিতে বড় বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে দলের নেতাকর্মীরা। মৃত্যু নিয়ে অব্যাহত গুঞ্জনের মধ্যে এই বিক্ষোভের ডাক দেয়া হয়েছে যা মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) আদিয়ালা কারাগার ও ইসলামাবাদ হাইকোর্ট এলাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে পিটিআই নেতাকর্মীদের এই বিক্ষোভ দমাতে রাওয়ালপিন্ডি ও ইসলামাবাদে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। গত সোমবার (১ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদ রাজধানী অঞ্চলের প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসন এই নির্দেশনা জারি করে।
রাওয়ালপিন্ডির ডেপুটি কমিশনার হাসান ওয়াকার চীমা স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়েছে, আগামী বুধবার (৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। আইন অনুযায়ী, যেকোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, জমায়েত, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ, জনসভা এবং পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির অনুরূপ যেকোনো সমাগম নিষিদ্ধ থাকবে।
‘সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে’ বলে সরকারি ঘোষণায় জানানো হয়েছে।
ইমরান খানকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার স্বজনদের প্রতি সপ্তাহে দেখা করতে দিতে হবে। কিন্তু গত চার সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কারা কর্তৃপক্ষ ইমরানের সঙ্গে কাউকে দেখা করতে দেয়নি।
গত সপ্তাহে ইমরান খানের তিন বোন কারাগারের সামনে সড়কে ১২ ঘণ্টার বেশি সময় অবস্থান করার পরও ইমরানের দেখা পাননি, বরং তাদের জোর করে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে ইমরান খানকে নিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।
কেউ কেউ বলছেন, এই পিটিআই নেতাকে আদিয়ালা কারাগার থেকে অন্য কোথাও সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে মৃত্যুর গুজবও। এমন পরিস্থিতিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পাকিস্তানের রাজনীতি।
গত বুধবার (২৬ নভেম্বর) কারা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে দাবি করে, ইমরান খান এখনও (আদিয়ালা) কারাগারেই আছেন, সুস্থও আছেন। এ অবস্থায় বাবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ইমরানের দুই ছেলে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, কারা কর্তৃপক্ষ তাঁর (ইমরান) বর্তমান অবস্থা নিয়ে সম্ভবত কোনো সত্য গোপন করছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এক সাক্ষাৎকারে ছোট ছেলে কাসিম খান বলেন, পরিবার থেকে ইমরান খানের সঙ্গে সরাসরি বা বিশ্বাসযোগ্য কোনো যোগাযোগ এখনো সম্ভব হয়নি। তিনি আরও বলেন, ‘বাবা নিরাপদে আছেন নাকি আহত হয়েছেন, কিংবা তিনি আদৌ বেঁচে আছেন কি না, তা জানতে না পারা এক ধরনের মানসিক অত্যাচার।’
৭২ বছর বয়সি ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে কারাবন্দি। ২০২২ সালে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। তার পর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হয়েছে এবং কয়েকটি মামলায় তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজা পেয়েছেন। যদিও ইমরান দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে হওয়া সব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.