দেশচিন্তা ডেস্ক: আলেম-ওলামাদের মেহনত ব্যর্থ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, ৫৪ বছর ধরে নিপীড়ন, বির্যাতন, নিগ্রহের পরেও ইসলামী শক্তি মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস পেয়েছে। পূর্ব দিগন্তে নতুন সূর্য উঁকি দিচ্ছে, ওঠা বাকি মাত্র। এখন আমাদের ঐক্য ধরে রাখতে হবে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে বাংলাদেশ মসজিদ মিশন কর্তৃক আয়োজিত ‘মুসলিম পারিবারিক আইন প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার ও ইমাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাসনামলে মুসলিম পারিবারিক আইন নামে এমন কিছু বিধান চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যার কিছু কিছু বিষয় ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমরা আশা করছি, সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে বিশেষজ্ঞ আলেমদের সমন্বয়ে এটি সমাধান করবেন।
মসজিদ মিশনের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীনের সভাপতিত্বে ও জেনারেল সেক্রেটারি ড. মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানীর পরিচালনায় সেমিনার ও ইমাম সম্মেলনে প্রধান অথিতির বক্তব্যে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম অধ্যুষিত দেশ। এ দেশের মানুষ ঈমানের ব্যাপারে ও দ্বীনের ব্যাপারে আপোসহীন। কুরআন ও সুন্নাহর কথা বললে তারা দ্বিধাহীনভাবেই তা গ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, কিন্তু পাকিস্তানি শাসনামলে মুসলিম পারিবারিক আইন নামে আমাদের ওপর এমন কিছু বিধান চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যার কিছু কিছু বিষয় ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সচেতন আলেম সমাজ এ নিয়ে কথা বললেও অদ্যাবধি এর সুষ্ঠু সমাধান হয়নি। আমরা আশা করছি, সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে বিশেষজ্ঞ আলেমদের সমন্বয়ে এটি সমাধান করবেন।
হিলে বিয়ে শরিয়তে হারাম উল্লেখ করে ড. খালিদ বলেন, তালাকের যথেচ্ছ ব্যবহার হয়ে থাকে। স্ত্রীকে তালাক দেয়ার পর বাচ্চারা কাঁদে, স্বামী কাঁদে। তালাক দেয়া স্ত্রীকে আবার ফিরিয়ে আনতে চায়। এসময় এক শ্রেণির মানুষ শরিয়তের অপব্যখ্যা দিয়ে নারীদেরকে হিলে বিয়ে দেয়ার পায়তারা চালান। এটা নারীর প্রতি অবমাননাকর এবং এতে ইসলামের ওপর আঘাত আসে।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. নকীব মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ বলেন, প্রত্যেক মুসলিমকে ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক সকল ক্ষেত্রেই ইসলাম পালন করতে হয়। কিন্তু বিদ্যমান আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে তারা চাইলেও কিছু বিষয়ে ধর্মীয় বিধান পালন করতে পারছে না। জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী ন্যায় ও ইনসাফের বাংলাদেশে এ সমস্যার দ্রুত সমাধান করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।
বিশেষ অথিতি হিসেবে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শামছুল আলম, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মো. আ. ছালাম খান।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, প্রফেসর ড. এবিএম মাহবুবুল ইসলাম। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন— মুফতি সাঈদ আহমদ মুজাদ্দেদী, চেয়ারম্যান ইসলামী ব্যাংক শরিয়া কাউন্সিল, প্রফেসর ড. নিজাম উদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা আব্দুল হালিম, সেক্রেটারি, তা’লিমুল কুরআন ফাউন্ডেশন, মাওলানা আবু তাহের জিহাদী, আমির ইসলামিক কানুন বাস্তবায়ন পরিষদ, প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ, ব্রিটিশ একাডেমিশিয়ান ও ব্রিটিশ কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ, ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী, বাইতুস শরফ দরবার শরিফ, মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, শায়খ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, প্রফেসর ড. ওয়ালী উল্লাহ, প্রফেসর ড. আ.ন.ম রফিকুর রহমান মাদানী, অধ্যক্ষ আ.খ.ম আবু বকর সিদ্দিক, মুফতি রেজাউল করিম আবরার, মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী ও অধ্যক্ষ মাওলানা মোশাররফ হোসেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মুহাম্মদ ইমরান সোহেল। মোবাইল : ০১৮১৫-৫৬৩৭৯৪ । কার্যালয়: ৪০ কদম মোবারক মার্কেট, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম। ইমেল: [email protected]
Copyright © 2025 Desh Chinta. All rights reserved.